অমিছা বেগমের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের কিসামতডাঙ্গি গ্রামে। তার মেয়ে মমতা বেগম সৈয়দপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
কথা হয় মমতা বেগমের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর ১২ নভেম্বর সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় ওই কমিটির সভাপতি একরামুল হক আমার বাবার নাম যাচাই-বাছাই করার সময় বাদ দেন। একইভাবে আমেরিকা প্রবাসী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম নওশাদের নামও বাদ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, কমিটির সভাপতি কিছু অনৈতিক সুবিধা দাবি করেছিলেন। তা দেওয়া হয়নি বলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়। পরে ওই বছরে ১৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা-২০১৬ এর বিধান মতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বরাবরে আপিল দাখিল করা হয়।
মমতা আরও বলেন, ২০০৬ সালে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব আলী মারা যান। মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে তার মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটে। ফলে জীবদ্দশায় বাবা কোনো মুক্তিযোদ্ধা কার্ড করেননি। বর্তমানে আমার মা শয্যাশায়ী। তার ৭৫ ভাগ কিডনি ড্যামেজ। রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মোবাচ্ছের আলমের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আমার মা।
মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিনের সহযোদ্ধা বাবুল হোসেন, রবিউল ইসলাম ও হরমুজ আলী বাংলানিউজকে জানান, মাহতাব উদ্দিন ৬ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। তবে কমান্ডারের নাম মনে নেই। কিভাবে যাচাই-বাছাই থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা বাদ পড়েন তা বোধগম্য হচ্ছে না।
অমিছা বেগম কেঁদে কেঁদে বাংলানিউজকে বলেন, আমার স্বামী দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। মৃত্যুর আগে আমার স্বামীর নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় দেখে যেতে চাই।
এ বিষয়ে সৈয়দপুরের সাবেক মুতিযোদ্ধা কমান্ডার একরামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, টাকা-পয়সা নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তবে মাহতাব উদ্দিন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হলেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে না পারায় তালিকাভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে আপিলের সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২০
এনটি