মৃত নূর মোহম্মদ তালুকদার (৮২) রাজিহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি।
জানা যায়, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ভোর রাতে বরিশাল নগরের এক আত্মীয়ের বাসায় মৃত্যু হয় নূর মোহাম্মদ তালুকদারের।
নূর মোহম্মদ তালুকদারের বড় ছেলে বাবুল তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, গৌরনদী উপজেলার নন্দনপট্টি গ্রামের চিহ্নিত সুদ ব্যবসায়ী আলী হোসেন বেপারী, শাহীন ঘরামী ও বাঙ্গিলা গ্রামের খোকন নামের সুদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তার বড় বোন দোলন বেগম ৭ বছর আগে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা সুদে নেন। কিছু দিন পরে বোন বিদেশ চলে যাওয়ায় ওই টাকা পরিশোধের দায়িত্ব নেন তার বাবা। গত ৫ বছরে ১০ লাখ টাকা পরিশোধের পরও ওই তিন সুদি ব্যবসায়ী তাদের কাছে আরও ১৩ লাখ টাকা দাবি করে। একইসঙ্গে তারা তার বাবাকে আসামি করে পৃথক মামলা দায়ের করে। একটি মামলায় তার বাবার পক্ষে রায় হয়। পরে তার বাবা নূর মোহম্মদ সুদি মহাজনদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প উদ্ধারের জন্য একটি মামলা করেন। যা আদালতে বিচারাধীন।
তিনি আরও জানান, এদিকে নূর মোহাম্মদ তালুকদারের মৃত্যুর খবর পেয়ে সুদি ব্যবসায়ী শাহীন ঘরামী ও খোকন বেপারী তাদের বাড়িতে গিয়ে টাকা পরিশোধ না করে মরদেহ দাফনে বাধার সৃষ্টি করেন। মরদেহ দাফনের পর শুক্রবার রাতেই অন্য ভাই-বোনদের নিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে চাইলে সুদি ব্যবসায়ীরা টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মরদেহ দাফন করতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এ কারণে শনিবার সকালে তার বাবাকে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে দাফন করতে পারেননি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মরহুমের ভাতিজা আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও রাজিহার ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার বলেন, নূর মোহম্মদের ছেলে-মেয়েদের এ বিষয়টি সমাধানের জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরাও তাদের সহায়তা করবো।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, সুদের টাকার কারণে মরদেহ দাফনে বাধা প্রদানের খবর পেয়ে ওই গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়। টাকা পয়সার লেনদেন থাকতে পারে, তা পরিশোধ বা আদায়ের অনেক ব্যবস্থা আছে। তাই বলে সুদের টাকার জন্য মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়া বর্বরোচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
এমএস/এইচএডি/