সোমবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে চলতি সংসদের সদ্যপ্রয়াত সদস্য মোজাম্মেল হোসেনের শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন সংসদ সদস্যরা। সংসদ অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
গত ১০ জানুয়ারি মারা যান মোজাম্মেল হোসেন। অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার তার প্রয়াণে শোকপ্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পরে তার ওপর আলোচনা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিনি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি চলে গেলেও, যে অবদান রেখে গেছেন আমাদের ভবিষ্যৎ পথ চলতে তা অনুপ্রেরণা দেবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, তিনি একজন ভালো বক্তা ছিলেন। রাজনীতি, চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নে ও দুঃখী মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা, সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী আবুল কামাল আজাদ বলেন, তিনি মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিতেন। একজন গুরুত্বপূর্ণ সমাজসেবক ছিলেন।
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা যারা ৮০ বছর বয়সের ওপরে তারাও যে কোনো সময় চলে যেতে পারি। যদি কোনো ভুলত্রুটি করে থাকি আপনারা ক্ষমা করে দেবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, মোজাম্মেল হোসেন গ্রামের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে আচরণ করতেন, একজন উচ্চবিত্তের সঙ্গেও সেভাবে আচরণ করতেন, কথা বলতেন। তার বাড়ি ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য অবারিত, সাধারণ মানুষের জন্য অবারিত। কোনো রোগীর টাকা না থাকলে তার ওষুধ কেনার ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন তিনি। তার জনসেবা, মানবসেবার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তিনি একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ ছিলেন। এবং জনপ্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে মা-বোনদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় চিকিৎসক ছিলেন তিনি। প্রসূতি মায়েদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিতেন মোজাম্মেল হোসেন।
শেখ ফজুলুল করিম সেলিম বলেন, মানুষের সঙ্গে মোজাম্মেল হোসেনের ব্যবহার ছিল অমায়িক। তিনি আজীবন মানুষের সেবা করে গেছেন। সমাজের জন্য কাজ করেছেন। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, কিন্তু তার কর্ম আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে।
নৌপরিবহন প্রতিন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তার দ্বারা আমরা উৎসাহিত হতাম। আমি যখন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে মংলা বন্দরে যাই, তখন তিনি আমাকে নানা পরামর্শ দিয়েছিলেন, উৎসাহিত করেছিলেন। তিনি আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেও, তার কাজ থেকে আমরা উৎসাহ পাবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি নিয়েছিলেন তা বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি।
এদিন মোজাম্মেল হোসেনের প্রয়াণে উপস্থাপিত শোকপ্রস্তাবে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগ নেতা আফম রুহুল হক, মৃণাল কান্তি দাস, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহিদ, আসম ফিরোজ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান।
পরে সংসদে শোকপ্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২০
এসকে/এইচজে