বুধবার সন্ধ্যায় হিমালয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকা এসে পৌঁছাবে। ছয় দিনের সফরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন, জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনসহ একাধিক সেমিনারে অংশ নেবে তারা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশের ইযুথ ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশের ইযুথ ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওয়াই ডি ডি) এবং নেপালের কাঠমান্ডু বার্নহার্ট কলেজ ও বেসরকারি সংস্থা ফোরে ইন্টারন্যাশনালের যৌথ আয়োজনে ‘নেপাল-বাংলাদেশ সেকেন্ড ট্রান্সন্যাশনাল সোশ্যাল ওয়ার্ক ক্যাম্প মার্কিং বার্থ সেন্টেনারি অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শিরোনামে এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক সফর বিনিময়ের অংশ হিসেবে আগামী এপ্রিলে নেপালে যাবে বাংলাদেশের ৩৪ জন ছাত্র-শিক্ষক।
বাংলাদেশ সফরে নেপালি প্রতিনিধিদলটি ১৬ জানুয়ারি সকালে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের বাংলাদেশ পর্ব শুরু করবে। পরে তারা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবে। ওইদিন বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার ফর অ্যাডভান্স রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স (কারাস) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ-নেপাল ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম।
অনুষ্ঠানে দুই দেশের পরিপ্রেক্ষিতে স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ব্ল্যাক/ডার্ক ট্যুরিজম বিষয়ে দু’টি পৃথক সেমিনার ও দুই দেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিশেষ অতিথি থাকবেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। সভাপতিত্ব করবেন ওয়াই ডি ডি’র সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জয়নাব বিনতে হোসেন শান্তু।
অনুষ্ঠানে নেপালের ৩৪ ছাত্র-শিক্ষকের পাশাপাশি বাংলাদেশের ৬৬ জন তরুণ পেশাজীবী ও শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকবেন। এদিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নেতাদের সঙ্গে আরেকটি মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন তারা।
১৭ জানুয়ারি সকালে নেপালি শিক্ষার্থীদল কামরাঙ্গীর চর এলাকা পরিদর্শন করবে। গত এক দশকে রাজধানীর প্রান্তিক উপ-শহুরে এলাকার উন্নয়ন ও বদলে যাওয়ার কর্মপদ্ধতি পরিদর্শনের অংশ হিসেবে কামরাঙ্গীর চর এলাকা বেছে নেওয়া হয়েছে। এসময় তারা স্থানীয় ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এদিকে নেপালি প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় আসার প্রাক্কালে গত ১০ জানুয়ারি (শুক্রবার) কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়। নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন চিত্র এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সম্যক ধারণা দেন। এসময় নেপালি প্রতিনিধিদলের দলনেতা রুকিশ ঘিমিরি, প্রগতি খাড়কা, সুদীপ লামা, রাম পুকার মাহারা, নীরু কারকিসহ বাংলাদেশ সফরে প্রস্তুত নেপালিদলের সবাই উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ছয় দিনের সফরে তারা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সদর দপ্তর পরিদর্শন ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিমিয়, ঢাকাস্থ নেপালের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন ই-থ্রির সঙ্গে মতবিনিময়, প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁ, পানাম নগর ও লোকশিল্প জাদুঘর এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শন করবে। ২০ জানুয়ারি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে অনুষ্ঠিত হবে সমাপনী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কানিজ সৈয়েদা বেন্তে সাবাহ। ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায়ই তারা কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে।
মুজিববর্ষ উদযাপন ও যুব অভিজ্ঞতা বিনিময় কার্যক্রম প্রসঙ্গে বাংলাদেশের আয়োজক ওয়াই ডি ডি’র সাধারণ সম্পাদক বাপ্পাদিত্য বসু বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে আমরা নিয়মিতই যুব নেটওয়ার্কিং কার্যক্রম পরিচালনা করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের সামনে এগিয়ে যাবার পথ খুলে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা, তরুণ পেশাজীবী, পরিবেশকর্মী, উন্নয়নকর্মীদের শক্তিশালী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে আমরা যুব ক্ষমতায়নে আগ্রহী। তবে ২০২০ সালে আমাদের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষকে উৎসর্গ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
টিআর/আরবি/