মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা ও মহানগরের মুক্তিযোদ্ধারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের সময় জাফর ইমাম রাজশাহীতে বুদ্ধিজীবীসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষদের তালিকা তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন। তৎকালীন মুসলিমলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আয়েন উদ্দিনের সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে জিপে করে তিনি প্রকাশ্যে রাজশাহী শহর দাঁপিয়ে বেড়াতেন। এছাড়া রাজশাহী সার্কিট হাউজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে পাকিস্তানি বাহিনীর কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পেও ছিল তার যাতায়াত।
জাফর ইমামগংদের তালিকা ধরেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহীতে দীর্ঘ নয় মাস সাধারণ ও নিরীহ মানুষদের হত্যা করেছে। এছাড়া জাফর ইমাম রাজশাহীতে এনএসএফের (ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেডারেশন) মূল সংগঠক হিসেবে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের অনেক নেতাকর্মীদের ওপর বিভিন্ন সময়ে হামলার মূল কুশীলব ছিলেন।
অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক বলেন, ‘স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী আন্তর্জাতিক টেনিস কমপ্লেক্স থেকে রাজাকার জাফর ইমামের নাম অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আবারও তার নাম টেনিস কমপ্লেক্স থেকে অবিলম্বে অপসারণের জোর দাবি জানাচ্ছি’।
সংবাদ সম্মেলন থেকে একই দাবিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মহানগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচিরও ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে- রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. আবদুল মান্নান, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোহাম্মদ আলী কামাল ও রবিউল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাতুন নেসা তালুকদার, তৈয়বুর রহমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতার অনেক আগ থেকেই রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত। ২০০৪ সালে মারা যান জাফর ইমাম। এরপর ২০০৫ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার নামে রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সটির নামকরণ হয়। এরপর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করলে ‘নামকরণ’ বাতিল করে একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বা বুদ্ধিজীবীর নামে এ কমপ্লেক্সটি নামকরণের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
এসএস/ওএইচ/