গরু-মহিষের গাড়িগুলো কাঠের চাকা ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হতো। এখন তার স্থান দখল করেছে মাহিন্দ্রা, টমটমসহ আরও কিছু যানবাহন।
অনেক এলাকায় এখনো গরু-মহিষে গাড়ি ব্যবহার করা হয়। জমি থেকে ধান আনা, জমিতে জৈব সার নিয়ে যাওয়াসহ মালামাল পরিবহনের কাজে এখনো গাড়িগুলো অপরিহার্য। ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ভেতরে যেসব রাস্তায় বড় গাড়ি ঢোকে না এখনো সেসব রাস্তায় গরু-মহিষের গাড়ি চলে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান বলেন, আমি ১৯৯৪ সালে পঞ্চগড় মডেল হাটে বিয়ে করেছি । তখন এত আধুনিক যানবাহন ছিল না। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়নের মোলান খুড়ি গ্রাম থেকে আমরা মিনিবাসে করে বিয়ের বরযাত্রী যাই। মিনিবাসে উঠতে বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে যেতে হতো। ওই সময় বরযাত্রীরা কেউ মহিষের গাড়িতে করে, কেউ বা পায়ে হেঁটে গিয়ে মিনিবাসে উঠতো। বিয়ে করে যখন আমরা গ্রামের বাড়ির দিকে রওয়ানা হই মিনিবাস তখন গ্রামের ছোট রাস্তায় ঢুকতো না। বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূর থেকে মিনিবাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে আসতে হতো বাড়িতে। তখন আমাদের (বর-কন) মহিষের গাড়িতে করে বাড়িতে আনা হয়েছিল।
সদর উপজেলার আসাদুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে গরু-মহিষের গাড়ি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হতে দেখেছি। এখন গরু-মহিষের গাড়ি তেমন আর ব্যবহার হয় না। এখন মানুষ মাহিন্দ্রা, পাওয়ারট্রলি ও ট্রাক্টরসহ ইঞ্জিনচালিত গাড়ি দিয়ে যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে। আগে গরু-মহিষের গাড়িতে সেসব করা হতো।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গরু-মহিষের গাড়ি ঐতিহ্যবাহী বাহন ছিল। এই গাড়ি দিয়ে আগের মানুষ যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজ করতেন। আগের অনেক ঐতিহ্য ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এখন মানুষ গরু-মহিষের গাড়ি ব্যবহার করার চেয়ে ইঞ্জিন চালিত গাড়ি বেশি ব্যবহার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
এইচএডি/