বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
‘রাজশাহী জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের মুক্তিযোদ্ধা’ ব্যানারে মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে সকালে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) একই দাবিতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে রাজশাহী জেলা ও মহানগরের মুক্তিযোদ্ধারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় জাফর ইমাম রাজশাহীতে বুদ্ধিজীবীসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষদের তালিকা তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন। তৎকালীন মুসলিমলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আয়েন উদ্দিনের সঙ্গে তার সখ্যতা ছিলো।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে জীপে করে তিনি প্রকাশ্যে রাজশাহী শহর দাঁপিয়ে বেড়াতেন। এছাড়া রাজশাহী সার্কিট হাউজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পেও ছিলো তার যাতায়াত।
জাফর ইমামগংদের তালিকা ধরেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহীতে দীর্ঘ নয়মাস সাধারণ ও নিরীহ মানুষদের হত্যা করেছে। এছাড়া জাফর ইমাম রাজশাহীতে এনএসএফ'র মূল সংগঠক হিসেবে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের অনেক নেতাকর্মীদের ওপর নানান সময়ে হামলার মূল কুশীলবও ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী আন্তর্জাতিক টেনিস কমপ্লেক্স থেকে কুখ্যাত রাজাকার জাফর ইমামের নাম অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আবারও তার নাম টেনিস কমপ্লেক্স থেকে অবিলম্বে অপসারণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. আবদুল মান্নান, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোহাম্মদ আলী কামাল ও রবিউল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাতুন নেসা তালুকদার, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতার অনেক আগ থেকেই রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত। ২০০৪ সালে মারা যান ক্রীড়া সংগঠক জাফর ইমাম। এরপর ২০০৫ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার নামে রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সটির নামকরণ হয়। এরপর আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করলে ‘নামকরণ’ বাতিল করে একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বা বুদ্ধিজীবীর নামে এ কমপ্লেক্সটি নামকরণের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২০
এসএস/এএটি