ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ধর্ষকদের ক্রসফায়ারে দেওয়ার দাবি ব্যক্তিগত বিষয়: কাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
ধর্ষকদের ক্রসফায়ারে দেওয়ার দাবি ব্যক্তিগত বিষয়: কাদের

ঢাকা: জাতীয় সংসদে ধর্ষকদের এনকাউন্টার বা ক্রসফায়ারে দেওয়ার যে দাবি করা হয়েছে, তা ব্যক্তিগত মত বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেছেন, ক্রসফায়ার সরকার বা আমাদের দলের কোনো বিষয় না। এটা সংবিধান সম্মত নয়।



বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতীয় সংসদে ধর্ষকদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এ বিষয়টি অনলাইনে দেখেছি। আমি তখন সিঙ্গাপুর ছিলাম। ফলে আমি সেদিন সংসদে ছিলাম না। ’ 

‘যারা বক্তব্য রেখেছেন এনকাউন্টারের পক্ষে, আমার মনে হয় এটা তাদের ব্যক্তিগত মতামত। এটা সরকার বা আমাদের দলের কোনো বিষয় নয়। আমরা এনকাউন্টার বা ক্রসফায়ারকে তো সাপোর্ট করতে পারি না। কারণ এটা সংবিধানের আওতার বাইরে ও সংবিধান সম্মত নয়। ’

আরও পড়ুন>> বিএনপি এনালগ বাংলাদেশে বিশ্বাসী, ডিজিটাল নয়: কাদের

তিনি বলেন, ‘সংবিধান মোতাবেক আমরা দলীয়ভাবে বা সরকারিভাবে এনকাউন্টার সাপোর্ট করতে পারি না। ব্যক্তিগত যে কারো অভিমত থাকতে পারে, এটা ব্যতিক্রম। ’

গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াস সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু দাবি করেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে এটা কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না। তাই সময় এসেছে চিন্তা করার, ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হোক।  

এ সময় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, এতো ঘটনা ঘটছে, মাদকের জন্য এতো ক্রসফায়ার হচ্ছে। সমানে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। কিন্তু এই ধর্ষণের মতো জঘণ্য অপরাধ, এখন পর্যন্ত কেন একজন ধর্ষক বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় না? বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে যদি ব্যবস্থা না নেওয়া যায়, তবে কোনোক্রমেই এটা কন্ট্রোল করা যাবে না। এজন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে।  

পড়ুন>>‘সমাজকে ধর্ষণমুক্ত করতে হলে এনকাউন্টার মাস্ট’ 
       >> ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি সংসদে

একই দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, টাঙ্গাইলে বাসে ধর্ষণের পর পর পুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করলো। সেদিন যদি পুলিশ ওই পাঁচ ধর্ষককে মধুপুরে নিয়ে গুলি করে মারত, তাহলে কিন্তু অন্য কেউ আবার ধর্ষিত হতো না।  

তিনি বলেন, একটার পর একটা ধর্ষণ হচ্ছে। মেয়েরা বাসে ওঠে, ওই বাসে আগে থেকেই ৪-৫ জন থাকে। নারীরা ওঠার পর দেখা যায় ওরা যাত্রী না, ওরা ধর্ষক। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের পর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হোক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, সেখানে গুলি করে মারা হোক।  

পড়ুন>>কোর্টের আদেশ মেনে চলা উচিত, ভোটের তারিখ বিষয়ে কাদের 

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ধর্ষকদের একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত এনকাউন্টারে দিয়ে মেরে ফেলা। যাতে আর কোনো ধর্ষক যেন সাহস না পায়। ধর্ষক গ্রেপ্তার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে ওইখানে গুলি করে মেরে ফেলা হোক।

কাজী ফিরোজ রশীদ ও মুজিবুল হক চুন্নুর এমন দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে অনেককে এভাবে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। ভারতে একবার বাসে এক নারীকে গণধর্ষণ করা হয়। পরে সেখানে পাঁচ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর ওই পাঁচ ধর্ষককে ক্রসফায়ারে দেওয়া হয়েছে। তারপর ভারতে ধর্ষণের ঘটনা কমে গেছে। কাজেই আমি অন্য দুই সংসদ সদস্যের সঙ্গে একমত। আমি যদি চিনি যে সে ধর্ষক, সেই এই জঘণ্য কাজ করেছে- তার আর এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।

এ বিষয়ে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ফ্লোর নিয়ে বলেন, আল্লাহকে হাজির-নাজির করে বলছি, এসব ধর্ষকদের ক্রসফায়ার করলে কোনো পাপ হবে না বরং বেহেসতে যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
জিসিজি/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।