ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পথেরধারে বাহারি পিঠার পসরা, স্বাদ নিতে পিঠাপ্রেমীদের ভিড়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২০
পথেরধারে বাহারি পিঠার পসরা, স্বাদ নিতে পিঠাপ্রেমীদের ভিড় জেলার মোড়ে মোড়ে শীতের বাহারি পিঠার পসরা। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: শীতের আমেজ এখন সবখানেই। গ্রামই বলুন আর শহরই বলুন। দিন যাচ্ছে আর শীতের মাত্রা বাড়ছে। ভোরের প্রকৃতিতে থাকছে কুয়াশায় মোড়ানো চাদর। দিনের দুপুরে রোদ থাকলেও বিকেল থেকেই বইতে শুরু করছে শীতের হিমেল হাওয়া। শীতের ধকল সামলে নিতে যে যার মত করে প্রস্তুতি নিতে থাকেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহর ঘুরে দেখা গেছে জেলার মোড়ে মোড়ে শীতের বাহারি পিঠার পসরা আর স্বাদ নিতে পিঠাপ্রেমীদের ভিড়। জেলার মোড়ে মোড়ে শীতের বাহারি পিঠার পসরা।                     <div class=

ছবি: বাংলানিউজ" src="https://www.banglanews24.com/media/imgAll/2020January/bg/Bogura-Pitha-news-pic-120200116211428.jpg" style="width:100%" />এদিকে ঋতুবৈচিত্রের ধারায় শুরু হয়েছে মাঘ মাস। গ্রামে গ্রামে চলছে নতুন ধান থেকে চাল তৈরির কাজ। কৃষাণ-কৃষাণী ব্যস্ত মাঠে ও বাড়ির উঠানে। ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব। আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের এই উৎসব ধরে রাখতে পাড়া-মহল্লায় শহরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলছে নানা আয়োজন, নানা অনুষ্ঠান। জেলার মোড়ে মোড়ে শীতের বাহারি পিঠার পসরা।  ছবি: বাংলানিউজনতুন ধানের নতুন চালের নানা স্বাদের বাহারি পিঠাপুলি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ। প্রত্যেক শীতে গ্রামের বাড়িতে তো বটেই শহরের বাসাবাড়িতেও চলে পিঠাপুলির আয়োজন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এরই মধ্যেই শহর এলাকায় রাস্তার পাশের দোকানিরা বাহারি পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে জেঁকে বসেছে। তৈরি করছেন ভাপা, চিতই, কুশলি, ঝাল, সবজি মেশানো ঝাল পিঠা। তবে শীতের এসব গ্রামীণ পিঠা পাওয়া ও খাওয়া নিয়ে শহুরে মানুষের মধ্যে একটা হাহাকার ভাব থাকে। কিন্তু এই দোকানিরা শহুরে মানুষের শীতের গ্রামীণ ঐতিহ্যের বাহারি এসব পিঠার স্বাদ-আস্বাদনে অনেকটা সহায়ক ভূমিতা পালন করে থাকেন। চাইলেই যেকোনো মানুষ শীতের এসব পিঠার স্বাদ নিতে পারেন। বাসার পাশে, শহরের পথেরধরে বা মোড়ে মোড়ে এসব পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে আপনার অপেক্ষায় শীতজুড়ে বসে থাকবে এই দোকানিরা। পিঠা। বেগুনী বেগম। তার স্বামী ইদ্রিস আলী। বগুড়া শহরের খান্দার এলাকায় বসবাস করেন। শহরের শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম সড়কের মোড়ে খান্দার এলাকায় শীতের বাহারি পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেছেন এই দম্পতি।

এক লাইনে চুলায় বসিয়েছেন আট থেকে ১০টা। দুইটা চুলায় তৈরি হচ্ছে ভাপা পিঠা। অন্যগুলোতে চিতই, ডিম চিতই, ঝাল-মিষ্টি কুশলি ও ঝালপিঠা তৈরির কাজ চলে। কড়াই, পাতিল, চালের গুড়া, গুড়, নারিকেল, ডিম, শুঁটকি ভর্তা, তেলসহ আনুষাঙ্গিক সামগ্রী। প্রতিদিন বিকেল থেকে শুরু  হয়ে চলে রাত প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ওই দম্পতি এসব পিঠা তৈরি আর বিক্রি করেন।

গ্রামীণ এসব পিঠার স্বাদ-আস্বাদনে শহুরে মানুষের ভিড় বিকেল থেকেই শুরু হয়ে যায় এসব দোকানে। ক্রেতা সাধারণ দোকানের তিন পাশে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকেন। চাহিদামতো পিঠা বানিয়ে ক্রেতার হাতে তুলে দেন তারা। এই দম্পতির ব্যবসার কাজে সহায়তা করেন আরও কয়েকজন নারী-পুরুষ।

বেগুনী বেগম ও ইদ্রিস আলী বাংলানিউজকে জানান, ভাপা পিঠা ১০ টাকা, চিতই ১৫ টাকা, ডিম চিতই ২৫ টাকা, ঝাল ও মিষ্টি কুশলি আট টাকায় বিক্রি করেন তারা। শীত মৌসুমেই এ ব্যবসা করেন তারা। এ থেকে বেশ ভালোই আয় হয় তাদের। যা দিয়ে তাদের সংসার ভালোভাবেই চলে।

শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা ও আশ-পাশের এলাকায় দেখা গেলো শীতের বাহারি পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেছেন একাধিক দোকানি। পিঠা কিনছেন পিঠাপ্রেমীরা।  শাহীন, সিজার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সারাবছর ভাজিপুরির ব্যবসা করি। তবে শীত মৌসুমে শীতের পিঠাপুলিকে বেশি গুরুত্ব দেই। কারণ এ সময়টাই ক্রেতা সাধারণ বাহারি পিঠাপুলি বেশি খেয়ে থাকেন।

তাজুল ইসলাম, আলম মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, আগের মত বাসাবাড়িতে এসব পিঠার আয়োজন করা হয় না। এছাড়া পেশাগত কারণে অনেক সময় বাসার বাইরে থাকতে হয়। তাই বাসায় পিঠা তৈরি করলেও তা খাওয়া হয় না। ফলে রাস্তার পাশের দোকানেই শীতের পিঠার স্বাদ নিতে হয়।

সানজিদা খানম, চৈতি খান বলেন, পেশায় আমরা চাকরিজীবী। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে নির্দিষ্ট কাজের বাইরে সময় করে ওঠা যায় না। এতে নতুন কিছু তৈরি করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে অনেক সময় একা আবার কখনও পরিবার মিলে রাস্তার পাশের দোকানে গিয়ে পিঠাপুলি কিনে খাওয়া হয়। আবার সেগুলো কিনে বাসায়ও নিয়ে যাওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
কেইউএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।