স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গড়ে তোলে সরকার। আন্তঃবিভাগের রোগীদের জন্য প্রথমদিকে ২৯ শয্যার ব্যবস্থা থাকলেও পরবর্তীকালে তা ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।
সম্প্রতি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে প্রায় এক মাস আগে অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করতে গ্যারেজে পাঠানো হয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে চালানোর উপযোগী করতে আরও এক/দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।
এদিকে একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামতের জন্য গ্যারেজে থাকায় পার্শ্ববর্তী সদর ও কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রোগী পরিবহন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ১৫/২০ কিলোমিটার পথ অতিরিক্ত ভাড়া ও সময় গুণতে হচ্ছে রোগীকে। দ্রুত পৌঁছাতে অক্সিজেনবিহীন সাধারণ পরিবহনেই মুমূর্ষু রোগীকে পরিবহনে বাধ্য হচ্ছেন স্বজনরা। বেশির ভাগ রোগী পরিবহন করা হচ্ছে অনুমোদনহীন অটোরিকশায়। এক্ষেত্রে রোগী পরিবহনের অটোরিকশাও হরহামেশায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে।
জেলার অন্য সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একাধিক ও সদর হাসপাতালে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আপাতত একটিও নেই। এ যেন কর্তৃপক্ষের বিমাতাসুলভ আচরণ। তাই এ উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি আরও একটি আধুনিক সরঞ্জাম সম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্স।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই/আড়াইশ মানুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। জোড়াতালি দিয়ে চলা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩০/৩৫ জন রোগীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পরিবহন করে। আপাতত প্রয়োজন হলে সদর হাসপাতাল থেকে ফোনে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে নিয়ে রোগী পৌঁছানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল নিজেদের রোগী পৌঁছানোর পর এ হাসপাতালের ফোনের জবাব দিচ্ছেন। এতে রোগীকে অনেক কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। আরও একটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলকে চিঠি দেওয়া হলেও এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, অনেক পুরাতন হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্সটি প্রায় সময় মাঝ পথে বিকল হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে রোগীকে অন্য অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো যানবাহনে করে যেতে হয়। আপাতত মেরামত করতে গ্যারেজে পাঠানো হয়েছে বিকল অ্যাম্বুলেন্সটি। সারানো হলে আবার রোগী পরিবহন করা হবে। তবে রোগীর চাহিদার কারণে এ উপজেলায় আরও একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেশকাতুল আবেদ বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার হলেও মাঝে মধ্যে রোগীর চাপ বেড়ে যায়। রোগী পরিবহনের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরে জোড়াতালি দিয়ে চলছে। বর্তমানে মেরামত করতে গ্যারেজে পাঠানো হয়েছে। নতুন আরও একটি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রতি মাসে দুইটি করে চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
রোগী পরিবহনে দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
আরএ