ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নেই সাব-রেজিস্ট্রার, ভোগান্তিতে গাংনীবাসী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
নেই সাব-রেজিস্ট্রার, ভোগান্তিতে গাংনীবাসী

মেহেরপুর: প্রায় এক মাস ধরে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে গাংনী উপজেলাবাসী। প্রায় ১০ হাজার দলিল হাতে পাওয়ার প্রহর গুনছেন ভুক্তভোগী এ এলাকার মানুষ।

এদিকে, জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তির পাশাপাশি সরকারও হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। এক মাস ধরে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় সরকার হারিয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা।

এছাড়া এ অফিসের সঙ্গে জড়িত প্রায় শতাধিক মহুরা ও নকলনবীশ লেখকরা বেকার সময় পার করছেন।

জানা যায়, গাংনী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ইমরুল হুসাইন ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর এখান থেকে বদলি হওয়ার পর আর কোনো সাব-রেজিস্ট্রার এখানে পদায়ন করা হয়নি। রেজিস্ট্রি না হওয়ায় এ উপজেলার শত শত জমি ক্রেতা-বিক্রেতা ও জরুরি কাজে দলিল উত্তোলনকারীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

অপরদিকে, মুজিবনগর উপজেলায় প্রায় এক বছর ধরে সাব-রেজিস্ট্রার নেই। সদরের সাব-রেজিস্ট্রার শফিকুল ইসলাম সপ্তাহে তিনদিন সদর উপজেলায় এবং সপ্তাহে দুইদিন মুজিবনগর উপজেলায় অফিস করেন। দুই উপজেলা ঠেকাতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন তিনি। ১৪ ডিসেম্বর জেলা রেজিস্ট্রার অবসরে গেছেন। জেলার এ পদটিও শুন্য রয়েছে। গাংনী উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব কিংবা শূন্য পদ পূরণ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ উপজেলার মানুষগুলো।

সূত্র মতে, জেলার তিনটি উপজেলার মধ্যে ভৌগলিক দিক থেকে গাংনী উপজেলা আয়তন এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে এ জেলার অর্ধেক। প্রতি মাসে ১২শ’ থেকে দেড় হাজার দলিল রেজিস্ট্রি হয়ে থাকে এ উপজেলায়। সাব-রেজিস্ট্রার ২৬ ডিসেম্বর বদলি অবস্থায় ৯ হাজার ৯৭৪টি দলিল ভলিউম রেজিস্ট্রির প্রক্রিয়ায় ছিল। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ভলিউম হয়েছে। এখানে সাব রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর অভাবে সেগুলো মালিকদের দিতে পারছে না। প্রায় ১০ হাজার দলিল হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন দলিল মালিকরা।

গাংনীর সহড়াতলা গ্রামের নাজির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আমি জমি কিনে দিনক্ষণ ঠিক করে জমি বিক্রেতাকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা দিয়েছি। জমি বিক্রেতা একজন অসুস্থ মানুষ। সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় আমার জমি রেজিস্ট্রি হচ্ছে না। জমি রেজিস্ট্রি হওয়ার আগে উনি মারা গেলে আমার সব শেষ হয়ে যাবে।  

বাদিয়াপাড়া গ্রামের হুরমজ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমি জমি বিক্রি করতে না পেরে আমার বাবাকে ভারতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যেতে পারছিনা।

গাংনী উপজেলার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফাকের আলী বাংলানিউজকে জানান, রেজিস্ট্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গাংনী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ৭০ জন দলিল লেখক ও প্রায় ১৫০ জন সহকারী এখন বেকার জীবন-যাপন করছে। এছাড়া জেলা রেজিস্ট্রার না থাকায় এ বছর আমাদের লাইসেন্স ও নবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মচারীরা জানান, প্রতিদিনই দলিল গ্রহীতা, সেবা গ্রহীতারা অফিসে এসে গালাগাল করে যাচ্ছেন। আমরা তাদের কথার কোনো উত্তর দিতে পারছিনা।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বাংলানিউজকে বলেন, জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জানানো হয়েছে। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।