বুধবার (২২ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর এই বিশেষ বছরে আমরা জনগণের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দিতে পারছি।
‘আমরা মুজিববর্ষ ঘোষণা দিয়েছি। আর এই মুজিববর্ষে মানুষ ই-পাসপোর্ট পাবে, আধুনিক প্রযুক্তি পাবে, নতুন পাসপোর্ট পাবে। ’
আরও পড়ুন> দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট যুগে বাংলাদেশ
তিনি বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে আমরা পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সেবাকে যুগপোযোগী করতে এই ই-পাসপোর্ট চালু করা হয়েছে। ’
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম ই-পাসপোর্ট চালু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে আধুনিক ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করেছে। ১১৮টি দেশে এরইমধ্যে এটা হয়ে গেছে। বাংলাদেশকে নিয়ে এখন হলো ১১৯টি দেশ। আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম বাংলাদেশই ই-পাসপোর্ট চালু করতে সক্ষম হয়েছে। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক সে লক্ষ্যে যখনই যে প্রযুক্তি আসে, আমরা সে পদক্ষেপ নেই। ২০১৫ সালে ২৪ নভেম্বর আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট দিতে শুরু করি। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে আগামী ১০ বছরের জন্য আমরা এখন ই-পাসপোর্ট দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি। ’
‘আমাদের লক্ষ্য আমরা বাংলাদেশকে একটি উচ্চ মর্যাদায় নিয়ে যাবো। আর সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আমাদের যে প্রকল্প আমরা ই-পাসপোর্ট করার জন্য গ্রহণ করেছি। এর ফলে আমি মনে করি বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। ’
‘ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে’
ই-পাসপোর্টের নিরাপত্তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে পাসপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি এটা বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট। এর মধ্যে ইলেকট্রিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ থাকবে। সেখানে তার বায়োগ্রাফি এবং বায়োমেট্রিক অর্থাৎ তার ছবি, ফিঙারপ্রিন্ট এবং চোখের কর্ণিয়া থাকবে। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে যে একটা সমস্যা ছিল পাসপোর্ট নিয়ে সেখানে গলাকাটা পাসপোর্টও প্রচলিত ছিল আমাদের দেশে। সেটা আর কখনো হবে না। এর ফলে মানুষ আর ধোকায় পড়বে না। এখন স্বচ্ছতার সঙ্গে সব চলবে। ’
‘প্রবাসীরা যখন আসেন তখন শোনা যায় তারা নানা রকম হয়রানির শিকার হন, ভবিষ্যতে এ রকম হয়রানির শিকার আর তারা কখনো হবেন না। যারা বিদেশে যান তাদেরও আর কখনো হয়রানির শিকার হতে হবে না। ’
ই-পাসপোর্টে সহজে ইমিগ্রেশন সুবিধার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ই-গেট থাকবে যেখানে সরাসরি সহজে দ্রুত ইমিগ্রেশন করা যাবে। সেই সুযোগটাও সৃষ্টি করা হবে। একটা আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন পদ্ধতি আমরা এরইমধ্যে গ্রহণ করেছি। সে সুযোগটা আমাদের দেশের মানুষ পাবে। ’
এরইমধ্যে দেশের অভ্যন্তরে ৬৪টি জেলায় ৬৯টি পাসপোর্ট অফিস, ৩৩টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বিদেশে অবস্থিত ৭৫টি বাংলাদেশ মিশনে পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট, ভিসা, ইমিগ্রেশন সেবাকে সরকার মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্টজ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।
এ সংক্রান্ত একটি তথ্যচিত্র তুলে ধরেন ই–পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান।
ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন ২২ জানুয়ারি
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
এমইউএম/জেডএস