মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সংঠনের নেতাকর্মী সদস্যসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা অংশ নেন।
গত ২০ জানুয়ারি পরীবাগ এলাকায় বাংলা ট্রিবিউনের শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আলোকিত বাংলাদেশের সাজ্জাদ মাহমুদ খানকে পুলিশের এক সদস্য মোটরসাইকেল চাপা দেন।
দুই সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, পুলিশের কাজ জনগণের সেবা করা। অথচ এক পুলিশ কর্মকর্তা উল্টোপথে এসে দুই সাংবাদিককে চাপা দেন। আবার প্রতিবাদ করলে তাকে গালমন্দ করে মেরে চলে যান। এই হলো পুলিশের আচরণ। তাদের আচরণ দেখে আমি অবাক। এর ওপর যে মোটরসাইকেল দিয়ে চাপা দিয়েছেন, সেটির নম্বর প্লেটও ভুয়া। এটা আরও বড় ধরনের ক্রাইম। আমরা এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এ ঘটনার জন্য একজনকে অ্যাসাইন করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা জানি স্বাধীনতার সময় রাজারবাগে প্রথম রাইফেল হাতে প্রতিরোধ গড়েছিল পুলিশ বাহিনী। অথচ কয়েকজন সদস্যের জন্য গোটা বাহিনীর গৌরব নষ্ট হচ্ছে। জনগণের কাছে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমি ঊর্ধ্বতনদের আহ্বান জানাবো আপনারা এসব সন্ত্রাসীদের মতো আচরণকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে যেন বের করে দেন।
প্রতিবাদ সমাবেশ পরিচালনা করেন ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু।
এসময় সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত কাওসার, অর্থ সম্পাদক আবু হেনা রাসেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হরলাল রায় সাগর, দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজী, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সাইফ বাবলু, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহীন আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য রুদ্র মিজান, সদস্য ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার থেকে মোটরসাইকেলে করে পান্থপথে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন বাংলা ট্রিবিউনের শেখ জাহাঙ্গীর। তার সঙ্গে ছিলেন আলোকিত বাংলাদেশের সাজ্জাদ মাহমুদ। এ সময় পরিবাগের রাস্তার বিপরীত দিক থেকে আসা পুলিশের একটি বাইক তাদের ধাক্কা দেয়। একবার ধাক্কা দেওয়ার পর আবারও ইচ্ছা করে জাহাঙ্গীরের পা বরাবর চাপা দেন। তখন জাহাঙ্গীর ও সাজ্জাদ প্রতিবাদ করলে জাহাঙ্গীরকে লাথি মারেন এবং অকথ্য ভাষায় তাদের দুজনকে গালিগালাজ করেন। পরে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যান পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি। তার মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর- ঢাকা মেট্রো হ-১২-৭৫০৫।
এর আগে ১৮ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ৮টার দিকে খিলগাঁও বিশ্বরোড এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির কাছে হামলার শিকার হন বাংলানিউজের সিনিয়র রিপোর্টার আসাদুজ্জামান শিমুল।
রাতে কালো একটি মাইক্রবাসে বন্ধুদের সঙ্গে খিলগাঁওয়ের দিকে যাচ্ছিলেন শিমুল। এ সময় দ্রুতগতির একটি প্রাইভেটকার তাদের মাইক্রবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে দুই চালকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
একপর্যায়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য শিমুলরা মাইক্রোবাস থেকে নামলে প্রাইভেটকার চালকসহ বেশ কয়েকজন যুবক রড নিয়ে শিমুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে শিমুল অচেতন হয়ে পড়েন। পরে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরবর্তীকালে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় বিশ্রামে আছেন শিমুল। দুর্বৃত্তদের হামলায় শিমুলের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত ও শিরদাঁড়া আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
পিএম/টিএ