ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের ভুলে একদিন জেল খাটলেন নিরপরাধ মিজান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
পুলিশের ভুলে একদিন জেল খাটলেন নিরপরাধ মিজান

যশোর: যশোরে পুলিশের ভুলে একদিন কারাবাস করলেন মিজানুর রহমান ওরফে ‘তোতলা’ মিজান। বিস্ফোরক মামলার আসামি ‘পাগলা’ মিজানকে গ্রেফতার করতে গিয়ে না পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করলো ‘তোতলা’ মিজানকে। বোমা হামলা মামলায় জেলহাজতে গেলো দিনমজুর তোতলা মিজান।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ভোরে পুলিশ তাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ভুল বুঝতে পেরে বুধবার আদালতে প্রতিবেদন দিলে জামিন মেলে তোতলা মিজানের।

 

বুধবার (২২ জানয়ারি) সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি মেলে তার। কিন্তু তার আগেই একদিন কারাবাস করতে হলো তাকে।  

দিনমজুর তোতলা মিজান যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। আর বোমা বিস্ফোরণ মামলার এজাহার ও চার্জশিটভুক্ত আসামি পাশের গ্রাম সুজলপুর হঠাৎপাড়ার নূরুল হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান।  

মামলার সূত্রমতে, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি শহরতলীর সুজলপুর জামতলার আকবর মিয়ার রড ফ্যাক্টরির দোকানের সামনে খোলাডাঙ্গা গ্রামের সাগর, তাহের, সুজলপুরের হঠাৎপাড়ার মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান, নাজু, জাহাঙ্গীর, রিপন, রনি ও রবিউলসহ ১০/১২ জন নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশে লেখা কিছু পোস্টার টাঙাতে যায়। এসময় সুজলপুর গ্রামের আব্দুস সালাম মিঠু তাদের পোস্টার লাগাতে নিষেধ করেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুস সালাম মিঠুকে লক্ষ্য করে কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে। মিঠুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে সাগর ও তাহেরকে দু’টি বোমাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।  

এ ঘটনায় আব্দুস সালাম মিঠু বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২ জনের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। সর্বশেষ মামলাটি তদন্ত করে ৮ জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এসআই হায়াৎ মাহমুদ খান।

মামলার এজাহারে এবং চার্জশিটে আসামির নাম মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান। বাবার নাম নূরুল হাওলাদার ও গ্রামের নাম সুজলপুর হঠাৎপাড়া উল্লেখ করা হয়। অথচ গত মঙ্গলবার ভোর রাতে খোলাডাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে তোতলা মিজানকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি মডেল থানার এএসআই আল মিরাজ খান। এসময় মিজান জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে চাইলেও ওই দারোগা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী মিজান বুধবার বিকেলে আদালতের বারান্দায় সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্যানিটারি মিস্ত্রির কাজ করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করেন। তার বিরুদ্ধে কোনোদিন মামলা হয়নি। কিন্তু দারোগা কোনো কথাই না শুনে তাকে গ্রেফতার করেন।  

মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশের কর্তাব্যক্তিরাও অবহিত হন। পরে তারা খোঁজখবর নিয়ে ভুল বুঝতে পারেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার আদালতে বিষয়টি অবহিত করা হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদি হাসান তার জামিন মঞ্জুর করেন।  

এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ভুল আসামি ধরার অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। বুধবার আদালতে বিষয়টি অবহিত করা হলে আদালত আটক মিজানের জামিন দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
ইউজি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।