ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘রাজউকের সেবা নিতে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ লাগে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
‘রাজউকের সেবা নিতে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ লাগে’

ঢাকা: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ইমারতের নকশা অনুমোদনে ৫০ হাজার থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্র্যান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক): সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানায় সংস্থাটি।  

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এতে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন টিআইবির ফাতেমা আফরোজ ও ফারহানা রহমান।  

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট খাতে এ গবেষণা চালায় টিআইবি। গবেষণায় প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যক্তি পর্যায়ে নকশা অনুমোদনে ৫০ হাজার থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ২ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা টাকা পর্যন্ত রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়।  

আবার ১০ তলার বেশি ইমারতের নকশা অনুমোদনে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ফি-র অতিরিক্ত ১৫ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকা এবং বিশেষ প্রকল্পের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ১৫ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।  

প্রতিবেদনে টিআইবি আরও জানায়, ব্যক্তি পর্যায়ে রাস্তা প্রশ্বস্ত দেখাতে ২০-৩০ হাজার টাকা, ছাড়পত্র অনুমোদনে ১৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা ও রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার পর্যায়ে ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়।  

এছাড়া নকশা অনুমোদনে সময়ক্ষেপণ, সেবায় প্রতারণা ও হয়রানি, পরিদর্শনে অনিয়ম ও দুর্নীতি, নকশা বাস্তবায়নে আইন ও বিধির লঙ্ঘন, প্লট বরাদ্দ, প্লট হস্তান্তর, ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তরসহ একাধিক সেবায় ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না।  

এতে বলা হয়, নথি রক্ষকের কাছ থেকে মালিক নিজে বা দালাল কর্তৃক প্লটের ফাইল দেখানোর ক্ষেত্রে কোনো ফি না থাকলেও ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা, প্রকল্পের অাবাসিক ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তরে ফি না থাকলেও ২ থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় সেবাগ্রহীতাকে।  

লিজ দলিলে ৩১ হাজার থেকে ৬০ হাজার পর্যন্ত নির্ধারিত ফি থাকলেও ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। নামজারি প্লট প্রতি নির্ধারিত ফি এর চেয়ে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, হেবা ফ্ল্যাট প্রতি ৫০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা, বিক্রয় অনুমোদন ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ আদান-প্রদান করা হয়।  

বিল উত্তোলনে ফি না থাকলেও কার্যাদেশ মূল্যের ২ শতাংশ ঘুষ দিতে হয়। এছাড়াও নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারসহ ব্যাপক ঘুষ আদায় করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে টিআইবি।  

সংবাদ সম্মেলনে এসব দুর্নীতিরোধে বেশ কিছু সুপারিশও তুলে ধরেছে সংস্থাটি। অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতনরা উপস্থিত রয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
টিএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।