ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনার মানুষ গরুর মাংস খাওয়াই ছেড়ে দেবে!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২০
খুলনার মানুষ গরুর মাংস খাওয়াই ছেড়ে দেবে! খুলনায় গরুর মাংসের দোকান। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: হঠাৎ করেই খুলনায় ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে গরুর মাংসের দাম। এভাবে যদি অযৌক্তিকভাবে গরুর মাংসের দাম বাড়ে, তবে সাধারণ মানুষ গরুর মাংসই খাওয়া ছেড়ে দেবে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) খুলনার গল্লামারী বাজারে গরুর মাংস কিনতে আসা ক্রেতা আবদুল্লাহ এভাবেই আক্ষেপ করেন।  

তিনি বলেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা।

বাজার তদারকির অভাবে কসাইরা সিন্ডিকেট করে গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধি করেছেন।

ওই দোকান থেকে পাঁচ কেজি মাংস কেনা রানা নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে হঠাৎ করেই গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। তবে কেন দাম বেড়েছে তার সঠিক জবাব দিতে পারছেন না বিক্রেতারা।

গল্লামারী বাজারের গরুর মাংস বিক্রিকারী মহিউদ্দিন বলেন, রাগ করে কোনো লাভ নেই। খেতে হলে এ দামে কিনতে হবে।

তিনি জানান, ভারত থেকে গরু আসা একদম বন্ধ। এছাড়া দেশি গরুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে মাংসের দাম বেড়ে গেছে।

মাংসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতি বা সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্ত রয়েছে কিনা জানতে চাইলে মহিউদ্দিন বলেন, আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা মাংসের দাম বাড়িয়েছি।

বাজারের অন্য মাংস বিক্রেতারা বলেন, পাইকারি বাজারে গরুর দাম বাড়তি থাকায় মাংসের দাম বেড়ে গেছে।

গরুর ব্যবসায়ীরা বলেন, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত নজরদারির কারণে গরু আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে সীমান্তের বিট খাটালগুলো এখন খাঁ খাঁ করছে আর গরু ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটছেন।

রূপসা ট্রাফিক মোড়ের হাবিব মিটের মালিক মো. হাবিব বলেন, পাইকারি বাজারে দেশি গরুর চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে দাম বেড়ে গেছে। বেশি দামে আমাদের গরু কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে মাংস বিক্রি করতে হচ্ছে।

মহানগরীর সাত রাস্তার মোড়ের শামীম হোটেলের মালিক মো. শামীম হোসেন বলেন, গরুর মাংসের দাম দিন দিন বেড়েই চলছে। আমরা বেশি দামে কিনলেও বেশি দামে বিক্রি করতে পারি না। এভাবে দাম বাড়লে গরুর মাংস কিনে ব্যবসা করার মতো থাকবে না।

গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) অধ্যাপক মো. সামিউল হক বাংলানিউজকে বলেন, দেশে গরুর কোনো সঙ্কট নেই। সামনে কোন উৎসব নেই। তারপরও গরুর মাংসের দাম বেড়েই চলছে। দীর্ঘদিন ধরে মধ্যবিত্তের খাদ্যতালিকায় আমিষের অন্যতম উৎস হিসেবে গরুর মাংস একটি বড় স্থান দখল করে ছিল। মধ্যবিত্তরা তো বটেই নিম্ন মধ্যবিত্তরা মাসে অন্তত একবার গরুর মাংসকে খাদ্যতালিকায় রাখতে সক্ষম হতো। কিন্তু মাংসের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধিতে এখন গরুর মাংস খাদ্যতালিকা থেকে বাদ পড়ার উপক্রম হয়েছে।

তিনি গরুর মাংসের দাম স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান।  

খুলনা জেলা বাজার কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বাংলানিউজকে বলেন, গরুর মাংসের দাম বেড়েছে এটা আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২০
এমআরএম/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।