ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মাসেতুতে বসছে ২৩তম স্প্যান, দৃশ্যমান হবে ৩৪৫০ মিটার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২০
পদ্মাসেতুতে বসছে ২৩তম স্প্যান, দৃশ্যমান হবে ৩৪৫০ মিটার

মুন্সিগঞ্জ: পদ্মাসেতু এলাকা থেকে শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মাসেতুর ২৩তম স্প্যান ৩১ ও ৩২ নম্বর পিলারের উপর বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। স্প্যানটি বসানো গেলে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৩ হাজার ৪৫০ মিটার। ২২তম স্প্যান বসানোর ১০ দিনের মাথায় বসতে যাচ্ছে ২৩তম স্প্যানটি। করোনাভাইরাসের প্রভাবে পদ্মাসেতুর কাজে ধীর গতির শঙ্কাকাকে পেছনে ফেলে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম চলছে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটিকে নিয়ে যায় 'তিয়ান ই' ভাসমান ক্রেন। সকাল ১০টা ১২ মিনিটের  দিকে স্প্যানটি সেতুর ৩১ ও ৩১ নম্বর পিলারের কাছে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

স্প্যানটি সকাল ৮টায় মাওয়া থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও আবহাওয়াজনিত কারণে বেশি সময় লেগেছে রওয়ানা করতে।  

প্রকৌশল সূত্রে জানা গেছে, স্প্যান বসানোর জন্য আগে থেকেই আনুষঙ্গিক কাজসমূহ সফলভাবে সম্পন্ন করা হবে। বর্তমানে স্প্যানটিকে পজিশনিং করে নির্ধারিত পিলারের কাছে নোঙর করার চেষ্টা চলছে। ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে এরপর তোলা হবে পিলারের উচ্চতায়, রাখা হবে দুই পিলারের বেয়ারিংয়ের উপর।  

জানা যায়, পদ্মাসেতুতে প্রথম স্প্যান '৭-এ' ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে বসে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। স্প্যান '৭-বি' সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি। স্প্যান '৭-সি' সেতুর ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ। স্প্যান '৭-ই' সেতুর ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ১৩ মে। স্প্যান '৭-এফ' সেতুর ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারে বসে ২০১৮ সালের ২৯ জুন। স্প্যান '১-এফ' সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে বসানো হয় ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর। স্প্যান '৬-এফ' সেতুর ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি। স্প্যান '৬-ই' সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। স্প্যান '৬-ডি' সেতুর ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ মার্চ। স্প্যান '৩-এ' সেতুর ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল। স্প্যান '৬-সি' সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল। স্প্যান'৩-বি' সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ মে। স্প্যান '৩-সি' সেতুর ১৫ ও ১৬ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৯ জুন। স্প্যান '৪-এফ' সেতুর ২৪ ও ২৫ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। স্প্যান '৪-ই' সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারে বসে ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর এবং স্প্যান '৩-ডি' সেতুর ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারের উপর বসে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর। ২৬ নভেম্বর সেতুর ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান '৪-ডি'। ১১ ডিসেম্বর '৩-ই' স্প্যান বসে সেতুর ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের উপর। ১৮ ডিসেম্বর ২১ ও ২২ নম্বর পিলারে উপর বসে স্প্যান '৪-সি' । ৩১ ডিসেম্বর ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারে বসে স্প্যান '৩-এফ'। ১৪ জানুয়ারি জাজিরা প্রান্তে ৩২ এবং ৩৩ নম্বর পিলারের ওপর বসে ২১তম স্প্যান এবং ২৩ জানুয়ারি মাওয়া প্রান্তের ৫ এবং ৬ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ২২তম স্প্যান।

পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। পদ্মাসেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

পদ্মাসেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে ৩৭টি পিলারের। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২০
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।