ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেম নিয়ে বশেমুরবিপ্রবিতে সংঘর্ষ, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২০
প্রেম নিয়ে বশেমুরবিপ্রবিতে সংঘর্ষ, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

গোপালগঞ্জ: প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই বিভাগের অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে শিক্ষার্থীরা পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং ফিজিক্স বিভাগের জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে প্রেম নিবেদন করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওই ছাত্রকে মারধর করে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান, আইন অনুষদের ডিন আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান হাসিবুর রহমানসহ অন্য শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। সংঘর্ষে আইন বিভাগের ১০ জন শিক্ষার্থী এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হন। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুইজন এবং আইন বিভাগের তিনজন বর্তমানে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অঙ্কিত বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে খুলনা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাওনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে শাওন আমার মোবাইল ফোনটি নিয়ে তার এক বান্ধবীকে কল দিয়ে কিছু সময় কথা বলে। পরবর্তীতে শাওনের ওই বান্ধবী আমাকে আবারও কল দেয়। তখন আমি ব্যস্ত থাকায় কল রিসিভ করতে পারিনি। রিসিভ করলে সে আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। আমি তাকে রোববার দেখা করার কথা বলি। দুপুরে যখন আমি ওই ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করি তখন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষার্থী এসে আমার পরিচয় জানতে চায়। আমি আমার পরিচয় দেওয়ার পরপরই আমাকে মারতে শুরু করে। আমার সঙ্গে থাকা সহপাঠী ঘটনাটি বিভাগের অন্যদের জানালে তারা ঘটনাস্থলে যায়। তখন তাদের ওপরও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ হামলা করে।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফ বাংলানিউজকে জানান, অঙ্কিত দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে আমাদের এক ছোটো বোনকে উত্ত্যক্ত করছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য আইন বিভাগের অঙ্কিতকে আমরা ডাকি। এ সময় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোনো কারণ ব্যতিতই আমাদের ওপর হামলা করে।  

এদিকে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রক্টর রাজিউর রহমানের পদত্যাগ দাবি করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান জানান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভুল বুঝে আমার পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা মনে করেছেন যে আমি আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছি। আর এমন ভুল বুঝেই শিক্ষার্থীরা এ দাবি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সভা চলছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, উত্তেজনা বিরাজ করায় ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।