শুমারির আগেই মোবাইলসহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে লিস্টিং অপারেশন শুরু হবে। এতে কয়েক ধরনের তথ্য নেওয়া হবে।
বিবিএস সূত্র জানায়, প্রথমবারের মতো মাল্টিমোড পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। মাল্টিমোডের মধ্যে রয়েছে, মোবাইল অ্যাপ, ওয়েব অ্যাপ, ড্রপ অ্যান্ড পিক, পেপার বেইজড, কল সেন্টার ইত্যাদি। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো সীমিত আকারে ই-সেন্সাস পরিচালনা করা হবে। ই-সেন্সাসে যারা তথ্য দিতে আগ্রহী তারা হাউজ হোল্ডের আইডি দিয়ে তথ্য দিতে হবে। তবে কেউ যদি ই-সেন্সাসে জনশুমারির তথ্য দিতে না চায় তাহলে বিবিএস’র কর্মীরা প্রশ্নপত্র নিয়ে ফরম পূরণ করে আনবে।
জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জাহিদুল হক সরদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আনন্দিত। এমন সময়ে জনশুমারির কাজ শুরু হতে যাচ্ছে, যখন জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ। আমাদের জীবনে এমন সময় আর আসবে না। এসব কথা মাথায় রেখে একটা নির্ভুল জনশুমারি করতে যাচ্ছি। কেউ যাতে বাদ না পড়ে সেজন্য মূল শুমারি শুরুর আগেই সারাদেশে শুরু হবে লিস্টিং অপারেশন। লিস্টিং অপারেশন শতভাগ সফল করতে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ বরাবর চিঠিও দিয়েছি।
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, আমরা এবার পাঁচটি পদ্ধতিতে শুমারির কাজ পরিচালনা করবো। শুমারির কভারেজ বৃদ্ধির জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে চলতি বছরের ১৭ মার্চ রাজধানীসহ সারাদেশে ৬৪টি জেলায় ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে ক্ষণগণনা শুরু করা হবে।
বিবিএস সূত্র আরও জানায়, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর দিন থেকে ক্ষণগণনা শুরু করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। আগামী বছরের ২-৮ জানুয়ারি সারাদেশে একযোগে জনশুমারি ও গৃহগণনা শুরু হবে। এছাড়া এবারের শুমারিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদেরও গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সৌদিআরবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বসবাস করেন, তাদের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। সৌদিআরব ছাড়াও আরব বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার ও বাহরাইনে প্রচুর সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস। এসব প্রবাসীদেরও গণনার আওতাও আনা হবে।
একইভাবে বাংলাদেশেও নানা প্রকল্পে কর্মরত ভারত, জাপানসহ নানা দেশের নাগরিকদেরও গণনার আওতায় আনা হবে। ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১’ প্রকল্পের আওতায় এ কাজ সম্পন্ন হবে। জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি জনশুমারি শুরু হয়ে চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
ষষ্ঠ জনশুমারিতে কেউ বাদ যাবে না। প্রবাসী ও দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের গণনা করা হবে। একইসঙ্গে জনশুমারিতে স্মরণ করা হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২১ সালের ১৭ মার্চ রাত ১২টাকে শুমারি মুহূর্ত ধরে পরবর্তী সাতদিন জনশুমারি ও গৃহগণনা করা হবে। ২০২১ এর মাঠ পর্যায়ে মূল শুমারির তথ্যসংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনার ৩৬৫ দিনের কাউন্ট ডাউন শুরু করা হবে।
‘পপুলেশন অ্যান্ড হাউজিং সেনশাস ২০২১’ প্রকল্পের আওতায় ষষ্ঠ জনশুমারি অনুষ্ঠিত হবে। স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে ২০২১ সালে ষষ্ঠ ডিজিটাল জনশুমারি করা হবে। এ পদ্ধতিতে দেশের একটি থানাও বাদ পড়বে না। স্যাটেলাইট ইমেজ দেখে জনশুমারিতে সারাদেশে চার লাখ গণনাকারী তথ্য সংগ্রহ করবেন। শিক্ষিত বেকারদের জনশুমারি প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। এরআগে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের জনশুমারির কাজে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে না। সাতদিনে চার কোটি থানায় (পরিবার) তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একজন গণনাকারী ১০০টি থানার তথ্য সংগ্রহ করবেন। ফলে তারা এক সপ্তাহে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০
এমআইএস/আরকেআর/এনটি