ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের হরিনাদী মৌজার (ঘাটুরা এলাকা) বিএস নম্বর ২৪ দাগ নম্বর ২১৫ ০.১০০০ একর ভূমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার এলএ মামলা নং ০৫ /২০১৯-২০২০ আওতাভুক্ত। ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি এ জায়গার মালিক আব্দুর নুর সরকারকে জায়গা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ জারি করে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা।
সূত্রে জানা গেছে, হরিনাদী মৌজার নাল ভূমির বাজার মূল্য (প্রতি শতক) ১ লাখ ২২ হাজার ৫৬৫ টাকা, ভিটি ভূমির মূল্য ১০ লাখ টাকা, পুকুর ভূমির মূল্য ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। একটি চক্র এই জায়গার মালিককে লোভ দেখিয়ে ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করে সরকারের কাছ থেকে শতগুণ অর্থ আদায়ের জন্য পরিকল্পনা করছে। শুধু এ জায়গাই নয়, প্রকেল্পর আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে রাতারাতি স্থাপনা নির্মাণ ও ভূমির শ্রেণী পরিবর্তনের হিড়িক পড়েছে। ফলে সরকারের জমি অধিগ্রহণের জন্য যে বাজেট করা হয়েছে তা বেড়ে দিগুণ হয়ে যাবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন শ্রমিক কয়েকদিন ধরে ওই জমিগুলোতে মাটিভরাট করে চারদিক টিনের বেড়া দিয়ে বসতঘর নির্মাণ করছে। এর ৫০ গজ দূরে একটি তেলের পাম্পও বানানো হয়েছে। তখন জায়গার মালিক পরিচয় দিয়ে একজন এসে বলেন, আমরা এখানে বসতঘর তৈরি করছি।
যদিও সরকারিভাবে দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত জায়গাতে নতুন করে কোনো স্থাপনা, অবকাঠামো তৈরি করা যাবে না এবং ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না।
এদিকে, এ জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা ও সড়ক-জনপথ বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে সওজের সার্ভেয়ার জাহিদুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কানুনগো আবুল কাশেমের এ বিষয়ে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি ফোনালাপে কানুনগোকে এক ব্যক্তি ফোন করে জানতে চান যে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে হলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই চলবে কি-না?। তখন কানুনগো তাকে সরাসরি দেখা করার অনুরোধ জানান।
সওজের সার্ভেয়ার জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, স্যাররা আমাকে জায়গার পূর্বের অধিগ্রহণ কতটুকু আছে সে দায়িত্ব দিয়েছে। অধিগ্রহণ পুরোটা সিসিডিবি ও ডিসি অফিস দেখছে। ভিটি শ্রেণী ও নাল শ্রেণী এসিল্যান্ডের অনুমোদন নিয়ে করতে হয়। কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে আমি জড়িত নই।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কানুনগো আবুল কাশেম মোবাইল ফোনে কথোপকথনের প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভয়েজ কেউ চেঞ্জ করে এ কাজ করেছে। আমি এখানে আসছি মাত্র দুই মাস হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা অঞ্জন দাস বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের ভালো সম্পর্কের বিষয়। এ প্রকল্পে যাতে নিয়মের বাইরে কোনো ধরনের সুযোগ না থাকে সে ব্যাপারে আমরা সর্বদা খেয়াল রাখব। খসড়া তৈরি হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের চূড়ান্ত তালিকা কাজ চলছে।
এ বিষয়ে চার লেনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহরুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিটি মামলার সঙ্গে সচিত্র ভিডিও দিয়ে থাকি। যদি শ্রেণী পরিবর্তন করা হয়ে থাকে সেটা ভূমি অধিগ্রহণ শাখা বলতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২০
এসএইচ