ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ক্যাবের হিসাবে কয়লা চুরি হয়েছে সাড়ে পাঁচ লাখ টন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২০
ক্যাবের হিসাবে কয়লা চুরি হয়েছে সাড়ে পাঁচ লাখ টন

ঢাকা: ক্যাবের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান ও গবেষণা কমিশনের সভাপতি সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে যা হয়েছে তা আসলে ছোট কোনো চুরি নয়। এটা পুকুর চুরি। লুণ্ঠনকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

মঙ্গলবার (০৩ মার্চ) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান ও গবেষণা কমিশন’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  

সংবাদ সম্মেলনে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির চুরির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এই কমিশনের তদন্তের সময় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিল। আমরা আমাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে হস্তান্তর করবো। তারপর সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা সরকারের ব্যাপার। আমাদের কাজটুকু আমরা করে দিয়েছি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উৎপাদনের শুরু থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই অবধি বিসিএমসিএল চুক্তিতে গ্রহণযোগ্য ৫ দশমিক ১ শতাংশ ময়েশ্চার (পানি) ধরে ১০১ দশমিক ৬৬ লাখ মেট্রিক টন কয়লার বিল পরিশোধ করা হয়। একই পরিমাণ কয়লা চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে প্রাপ্ত কলের পরিমাণ হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে কয়লার গড়ে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চার ছিল। এর অর্থ বিসিএমসিএল কর্তৃক গৃহীত কয়লার পরিমাণ ১০১ দশমিক ৬৬ লাখ টনের বেশি। কিন্তু ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চারে গৃহীত কয়লার পরিমাণের কোনো রেকর্ড নেই।

ক্যাবের ওই কমিশনের হিসাবে, ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চারে বিসিএমসিএল কর্তৃক প্রাপ্ত কয়লার পরিমাণ ১০৭ দশমিক ৩১ লাখ টন। যা বিসিএমসিএল কর্তৃক রেকর্ডভুক্ত কলার চেয়ে বেশি। এ প্রতিষ্ঠান কয়লার ব্যবহার বিক্রি করে ১০০ দশমিক ২২ লাখ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী ঘাটতি দেখায় ১ দশমিক ৪৪ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু কমিশনের হিসেবে একটি ৭ দশমিক শূন্য ৯ লাখ টন।  

পেট্রোবাংলা প্রস্তাব অনুসারে, কয়লার হিসাবে সিস্টেম লস গড়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১ দশমিক ৬১ লাখ টন ধরে নিয়েও কয়লার ঘাটতি অথবা আত্মসাৎ ৫ দশমিক ৪৮ লাখ টন।

সংবাদ সম্মেলনে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, তদন্ত করে দেখা যায় মামলার বাদী বিসিএমসিএল নিজেই কলা চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তদের পক্ষে ন্যায় এবং মামলাটি প্রহসনে পরিণত করে। যা হওয়ার নয় ও সামঞ্জস্যহীন। যা কমিশনের বিবেচনায় অসঙ্গতিপূর্ণ।

অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, বড়পুকুরিয়া খনি সম্পদ রক্ষা ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় কেবলমাত্র সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী নয়, পরিচালনা বোর্ড, শেয়ার হোল্ডার, পেট্রোবাংলা এবং জ্বালানি সম্পদ বিভাগ ব্যর্থ।  

‘দুদকের অভিযোগপত্র বিসিএমসিএল এর ৭ এমডিসহ ২৩ জন কর্মকর্তা অভিযুক্ত হলেও কমিশনের দৃষ্টিতে কেবল ওই ২৩ জনই নন, পরিচালনা বোর্ডের সদস্য, বিসিএমসিএল শেয়ারহোল্ডার এবং পেট্রো বাংলাসহ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বের অবহেলার কারণে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। ’

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাস তদন্তের প্রতিবেদন তুলে ধরেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক বদরুল ইমাম, অধ্যাপক এম এম আকাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২০
পিএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।