ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জুয়ার টাকা পরিশোধে ছিনতাই করতে গিয়ে খুন করেন ব্যবসায়ী অরুণকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
জুয়ার টাকা পরিশোধে ছিনতাই করতে গিয়ে খুন করেন ব্যবসায়ী অরুণকে

নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গায় আইপিএলের জুয়ায় হেরে যাওয়ার পর প্রেমিকার কাছ থেকে ধার নেওয়া ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেই ছিনতাইয়ের পথ বেছে নেন উপজেলার সোনাপাতিল গ্রামের সার ব্যবসায়ী অরুণ শর্মা হত্যার অভিযুক্ত আসামি রাজশাহী সিটি কলেজের অর্নাস প্রথম বর্ষের ছাত্র ও একই গ্রামের সাকের আলীর ছেলে আল আমিন (২২)।

রোববার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে সার ব্যবসায়ী অরুণ শর্মা (নোকান ঠাকুর) হত্যার ঘটনার এমন বর্ণনা দেন।

পরে তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

এরআগে, শনিবার (২৮ নভেম্বর) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার জিম ছাত্রাবাস থেকে গ্রেফতার করা হয় আল আমিনকে। এসময় ছিনতাইয়ের দুই লাখ ১৩ হাজার টাকা তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সকালের দিকে আরো ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। সোমবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের জন্য এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।  

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজররুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আল আমিন আদালতকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি আইপিএলের জুয়ায় অংশ নিয়ে ২০ হাজার টাকা হেরে যান। জুয়ার এই টাকা পরিশোধ করতে তিনি তার প্রেমিকার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার করেন। পরে প্রেমিকার ধারের টাকা পরিশোধ করতে ছিনতাইয়ের পথ বেছে নেন তিনি। আর ছিনতাই করতে গিয়ে হত্যা করে ফেলেন সার ব্যাবসায়ী অরুণ শর্মাকে। পরে ছিনতাই করা টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা প্রেমিকাকে পরিশোধও করেন তিনি। আর বাকি টাকা নিয়ে রাজশাহীতে তার ছাত্রাবাসে যান।

ওসি আরো বলেন, অরুণ শর্মা একজন সার ব্যবসায়ী। তার নিজস্ব লাইসেন্স ছিল না। ‘মেসার্স ফাতেমা ট্রডার্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে লাইসেন্স দিয়ে নলডাঙ্গা বাজারে সারের ব্যবসা করতেন। গত ২১ নভেম্বর (শনিবার) রাত ৯টার দিকে অরুণ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সোনাপাতিল গ্রামে তার নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে নলডাঙ্গা ব্রিজ এলাকা পার হয়ে সোনাপাতিল গ্রামের তালতলা এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন আল আমিন।

এ সময় অরুণ গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে তার কাছে থাকা প্রায় তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান আল আমিন। পরে তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে স্থানীয় বেসরকারি বিসমিল্লাহ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শ্যামলী শর্মা বাদি হয়ে ২২ নভেম্বর (রোববার) রাতে নলডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ঘটনা উদঘাটনে অভিযানে নামে পুলিশ। অবশেষে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার জিম ছাত্রাবাস থেকে গ্রেফতার করা হয় আল আমিনকে। এসময় ছিনতাইয়ের দুই লাখ ১৩ হাজার টাকা তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।