ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাদকাসক্তদের মধ্যে ইয়াবায় আসক্তের সংখ্যা বেশি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২০
মাদকাসক্তদের মধ্যে ইয়াবায় আসক্তের সংখ্যা বেশি মতবিনিময় সভায় অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু বলেছেন, মাদক হচ্ছে এমন একটি জিনিস যা একজন মানুষের সঙ্গে তার পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।

এছাড়া, বর্তমানে যারা মাদকে আসক্ত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে ইয়াবাতে আসক্তের সংখ্যা বেশি। শ্রেণীভেদে এ ধরণের মাদকের ভয়াবহতাও অনেক বেশি। অন্য মাদকে আসক্তদের সুস্থ হতে যতোটা না সময় লাগে, তার থেকে বেশি সময় লাগে এই ধরণের মাদকাসক্তদের।

শনিবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় দি নিউ লাইফ মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগ চিকিৎসা সহায়তা, নিরাময় ও পুর্নবাসন কেন্দ্রের আয়োজনে মাদকাসক্তি প্রতিরোধে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা ও গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় দি নিউ লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মর্তুজা জুয়েল বলেন, সমাজ থেকে মাদক দমনে চিকিৎসা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে একজন মাদকাসক্তকে সুস্থ করে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবে এজন্য সময় ব্যয় করতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সরকার অনুমোদিত তাদের এই নিরাময় কেন্দ্র থেকে গত ৯ মাসে ৬৯ জন মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রটিতে ২৩ জন মাদকাসক্ত যুবক চিকিৎসাধীন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বেশিরভাগই ইয়াবায় আসক্ত এবং তাদের বয়স ২৫ বছরের নিচে।

সভার শুরুতে ধারণাপত্র পাঠকালে নিউ লাইফের পরিচালক (প্রশাসন) ইয়াসির আরাফাত বলেন, চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি অধিকাংশ অভিভাবক এবং আসক্ত ব্যক্তিরা মাদকাসক্তি চিকিৎসা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পোষণ করেন না। ফলে তারা চিকিৎসা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেন। আমরা মনে করি মাদকাসক্তির চিকিৎসা সম্পর্কে সকলের মধ্যে সঠিক ধারণা তৈরি হলে আসক্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসা গ্রহণে ইচ্ছুক হবে এবং সমাজ থেকে মাদক নির্মূলে চিকিৎসা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে অবাধ তথ্য প্রবাহ বিরাজমান। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম সকলের নিকট মাদকাসক্তি প্রতিরোধে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব তুলে ধরলে সকলের মাঝে মাদকাসক্তি চিকিৎসা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। আসক্ত ব্যক্তিরা সুস্থতার পথ খুঁজে পাবে। মাদকাসক্তি একটি শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা হিসেবে চিকিৎসা বিজ্ঞান অবহিত করেছে।

তিনি বলেন, আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি বাংলাদেশের প্রচলিত ১০ থেকে ১৫ দিনের ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে মাদকাসক্তির নিরসন করা সম্ভব হচ্ছেনা। বর্তমানে বহিঃবিশ্বের গবেষক এবং বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে, দীর্ঘ মেয়দী ও কার্যকরী চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যক্তিকে মাদক মুক্ত করে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে অভ্যস্ত করে তোলা সম্ভব। চিকিৎসা বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত আধুনিক পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের সুস্থ করে তুলতে সক্ষম হচ্ছি। এখানে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক-মানসিক, আচরণিক, নৈতিক আধ্যাত্বিক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।

সভায় বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মাসুদ রেজা, দি নিউ লাইফের পরিচালক (কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা) ইনজামুল হক শুভসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২০
এমএস/এইচএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।