ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টাকার অভাবে শেষকৃত্য না করেই মাটিচাপা দেওয়া হলো ৬ জনকে

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২০
টাকার অভাবে শেষকৃত্য না করেই মাটিচাপা দেওয়া হলো ৬ জনকে

টাঙ্গাইল: টাকার অভাবে মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত টাঙ্গাইলের নাগরপুরের একটি পরিবারের ছয় সদস্যের শেষকৃত্য না করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভাদ্রা গ্রামের নিহতদের নিজ বাড়ির আঙিনায় মাটি চাপা দেওয়া হয়।

নিহতরা হলেন, ওই গ্রামের হরেকৃষ্ণ বাদ্যকার (৫৫), তার ছেলে গোবিন্দ বাদ্যকার (২৮), গোবিন্দর স্ত্রী ববিতা বাদ্যকার (২৫), মেয়ে রাধে বাদ্যকার (৪), চাচী খুশি বাদ্যকার (৫২) ও চাচাতো ভাই রাম প্রসাদ বাদ্যকার (৩০)।

ইউপি সদস্য মো. বেল্লাল সর্দার বাংলানিউজকে জানান, নিহতের পরিবারে হরেকৃষ্ণ বাদ্যকারের স্ত্রী ঝর্না বাদ্যকার এবং নিহত দু’ভাইয়ের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই। তারা খুবই দরিদ্র ও অসহায়। একসঙ্গে ছয়জনের মরদেহ দাহ করতে ৭০-৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। এতো টাকা ওই পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই সবার সিদ্ধান্তে মরদেহগুলো সকালে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। তবে নিহতের স্বজনরা যদি দাহ করার দাবি জানাতেন তাহলে আমাদের সহযোগিতায় মরদেহগুলো দাহ করা হতো।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান খান বাংলানিউজকে জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে হরেকৃষ্ণ বাদ্যকারের পরিবারের মধ্যে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। এছাড়াও ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে, শনিবার সকালে মরদেহগুলো মাটিচাপা দেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিহতদের বাড়ি পরিদর্শন করে আর্থিক সহযোগিতা দেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম, নাগরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিন মসরুর প্রমুখ।

মরদেহগুলো মাটিচাপা দেওয়ার বিষয়ে নাগরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিন মসরুর বাংলানিউজকে জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে হরে কৃষ্ণের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, চাচাতো ভাই রাম প্রসাদ বাদ্যকারের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা ও শনিবার সকালে অপর একটি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক জামাল শেখের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। তবে একই পরিবারের ছয়জনকে মাটি চাপার বিষয়টি আসলে টাকার অভাবে দেওয়া হয়েছে কি না তা তিনি জানেন না। আর এ বিষয়ে তাকে কেউ অবগত করেননি। যদি নিহতের স্বজনরা কেউ তাকে অবগত করতেন তাহলে অবশ্যই প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হতো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।