খুলনা: শতবর্ষ পুরনো জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত খুলনার খালিশপুরের ঐতিহ্যবাহী ভূতের বাড়ি সেজেছে নতুন সাজে। কালের সাক্ষী হয়ে থাকা বাড়িটিকে ধরে রাখতে খুলনা গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বাড়িটির আদি নকশায় আনেনি বিন্দুমাত্র পরিবর্তন।
বাড়িটিতে প্রবেশ করলে মনে হবে এটি শতবছরের পুরাতন কোনো রাজপ্রাসাদ। লোকমুখে প্রচলন আছে এটি কোনো এক রাজার বাড়ি ছিল। তবে কাগজে কলমে কোনো তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রায় দুই যুগ ধরে পরিত্যক্ত বাড়িটি ভূতের বাড়ি নামে পরিচিত ছিল এলাকায়। ভয়ে এই বাড়ির সীমানায় কেউ প্রবেশ করতো না। এলাকার কিছু বখাটে লোক দখলে রাখতো বাড়িটি।
অবশেষে সব আবর্জনা পরিষ্কার করে, বাড়ির কাঠামো ঠিক রেখে খুলনা গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে বসবাসযোগ্য করে তুলেছে পুরনো বাড়িটিকে। এতে রয়েছে ২৭টি দরজা, ৪৩টি জানালা, ৮টি কক্ষ। দোতলা বাড়িটিতে কুষ্টিয়া ও যশোরের মিঠা মাটির ইট ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যান্টি সল্ট কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছে। রঙের ব্যবহারে করা হয়েছে বিশেষ উপাদান। বাড়িটির প্রতিটি জানালা গর্জন কাঠের ৪টি পাল্লা ও দরজায় ২টি পাল্লা রয়েছে।
বাড়িটিতে এখন থেকে বসবাস করবেন খুলনা গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী।
জানা যায়, ষাটের দশকে খালিশপুরে সুপরিকল্পিত আবাসন গড়ে তুলতে খুলনা গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ৪০২ একর জমি অধিগ্রহণ করে গড়ে তোলে হাউজিং এস্টেট। সেই সময় ৭০ শতক জমিতে এ বাড়িটি ছিল। তখন থেকে বাড়িটি গৃহায়ণের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলী এখানে ছিলেন। তবে গত দুই যুগ ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। গত অর্থবছরে বাড়িটি মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়িটি মেরামতের কাজ শুরু হয়। মেরামত কাজের সমাপ্তি ঘটবে সোমবার (০৭ ডিসেম্বর)।
বাড়িটি সম্পর্কে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ্ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা আদি ঐতিহ্য ধরে রাখতে বাড়িটির নকশা হুবহু রেখেছি। বাড়িটি শতবর্ষ পুরাতন। এটা আরও একশো বছর টেকসই হবে এমনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। মনোরম পরিবেশ, দৃষ্টিনন্দন কাঠামো ও পারিপার্শ্বিক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ মন ছুঁয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
এমআরএম/এমজেএফ