ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কামালপুর স্থলবন্দর: ৪ মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও শুরু হয়নি কাজ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২০
কামালপুর স্থলবন্দর: ৪ মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও শুরু হয়নি কাজ কামালপুর স্থলবন্দর: ৪ মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও শুরু হয়নি কাজ। ছবি: বাংলানিউজ

জামালপুর: অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের বাধার মুখে প্রায় ১৫ কোটি টাকার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো। এরমধ্যে একাধিকবার কাজ করতে গেলে খলি হাতে ফিরতে হয়।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্টক ইর্য়াড, পার্কিং ইয়ার্ড ও স্থলবন্দরের মধ্যে রাস্তা নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকার দরপত্র শেষে কাজ পায় ‘মের্সাস আশরাফুল ইসলাম জেভি’। কাজের মেয়াদ ধরা হয় ৮ মাস। চুক্তি অনুযায়ী জুলাই মাসেই এসব শেষ হওয়ার কথা।

এদিকে একই বছরের ২৭ নভেম্বর ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস তমা কনস্ট্রাকশন। বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের পাশাপাশি ভূমি উন্নয়ন ও ড্রেন নির্মাণের কথা রয়েছে। কাজের মেয়াদকাল ধরা হয় ৮ মাস। চুক্তিপত্র অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই মাসে কাজের মেয়াদ শেষ হয়।

৪ মাস আগে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অধিগ্রহণকৃত ভূমি মালিকদের বাধার কারণে কাজই শুরু করতে পারেনি। একাধিকবার কাজ করতে গেলেও স্থানীয় জমির মালিকদের বাঁধার মুখে ফেরত আসতে বাধ্য হয়।

জমির মালিকরা অধিগ্রহণের সময় জমির দাম কম নির্ধারণ করায় এসব কাজ করতে বাধা দেন বলে জানান বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেন।

তিনি বলেন, কাজ করতে গেলেই জমির মালিকরা লাঠি শোঠা নিয়ে বাধা দেয়।

এ বিষয়ে জমির মালিকদের পক্ষে আব্দুল্লাহ আল মোকারেছ রিপন বাংলানিউজকে বলেন, অধিগ্রহণকালে জমির মালিকদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। মনগড়াভাবে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক জমিগুলো কৃষিভূমির অন্তভুর্ক্ত করে দাম কম ধরা হয়েছে। এছাড়া বর্তমান মূল্য অনুযায়ী জমির দাম দেয়নি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এখানে প্রতি শতাংশ জমির দাম ধরা হয়েছে মাত্র ১১ হাজার টাকা করে যা বর্তমান বাজার মূল্য ২ লাখ টাকারও উপরে।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস তমা কনস্ট্রাকশন সেলিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, স্থলবন্দরের কাজ করতে গেলেই স্থানীয়রা বাধা দেয় এজন্য কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় দুচিন্তার মধ্যে পড়েছি।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, জমি অধিগ্রহণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এসব জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি কাজে বাধা দেয় তবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জামালপুর-১ আসনের এমপি আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে জানান, কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে কামালপুর এলসি স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরে গত ডিসেম্বর মাসে স্থলবন্দরকে আধুনিয়কান করতে ১৫.৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। জমির মূল্য কম নির্ধারণ করায় উচ্চ আদালতের দারস্থ জমির মালিকরা। উচ্চ আদালত তাদের রিটটি খারিজ করে দিলে আবার রিভিউ করে তারা।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কামালপুর স্থলবন্দর হিসেবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এই স্থল বন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া ভারত সরকার। পরে স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে এটি এটি এলসি স্টেশন হিসেবে চালু করা হয়। পরে ২০১৫ সালে এটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।