ঢাকা: জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর অব্যাহত নেতিবাচক প্রচারণা, অবাস্তব শর্ত, অনড় অবস্থান ও অসহযোগিতার কারণে ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় জাতিংঘকে এখন পর্যন্ত সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে ৷ অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত না করার জন্য জাতিসংঘেরই সংস্থাগুলোকেই দায়ী করা হয়েছে ৷
মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ তধ্য জানা যায়৷
কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ, কে, আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মো. আব্দুল মজিদ খান, নাহিম রাজ্জাক এবং কাজী নাবিল আহমেদ অংশগ্রহণ করেন।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার প্রত্যাবাসন ও তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে উপস্থাপিত এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘সরকারের উচ্চতম পর্যায়ের সিদ্ধান্তে গত ৪ ডিসেম্বর সম্পূর্ণ স্বেচ্ছা সম্মতির ভিত্তিতে ২৬৪২ জন রোহিঙ্গারকে স্থানান্তর করা হয়। ভাসান চরের পরিবেশ এবং সুযোগ সুবিধা দেখে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এছাড়া মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের সংস্থাগুলোসহ মানবিক সহায়তা প্রদানকারী অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থাসমূহকে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে সংসদীয় কমিটিতে জানিয়েছে।
এদিকে সংসদীয় কমিটি ও মন্ত্রণালয় মনে করে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা ৩০৬জন রোহিঙ্গার নেতিবাচক প্রচারণার কারণেই ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরে জাতিসংঘের অনড় অবস্থান দেখাচ্ছে। এজন্য কমিটি গভীর সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসান চরে নিয়ে যাওয়া ওই ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে পিতা-মাতা বা নিকট আত্মীয়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়ার সুপারিশ করেছে।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে স্থানান্তরে জাতিসংঘের রিজিট অবস্থানসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতিসংঘের এই অবস্থানের মুলে সমুদ্রে ভাসমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করা ৩০৬ জন রোহিঙ্গা। তাদের নেতিবাচক প্রচারণার জন্য জাতিসংঘ এই অবস্থান দেখাচ্ছে। তবে, সর্বশেষ এ বিষয়ে জাতিসংঘকে কিছুটা নমনীয় মনে হয়েছে।
সংসদীয় কমিটি ওই ৩০৬ জন রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে না রেখে কক্সবাজারে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলেছে। যারা সেখানে গিয়ে খুশি আছে তাদের রাখতে বলেছি। যারা খুশি নয় তাদের ফিরিয়ে নিতে বলেছি। ভাসান চরে যে ১৬৪২ জন রোহিঙ্গাদের নেওয়া হয়েছে তারা পরিবেশ দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। শিগগিরই সেখানে আরো রোহিঙ্গা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘন্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২০
এসকে/এমএমএস