মানিকগঞ্জ: মাঝ পদ্মায় কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এতে ঘাট পয়েন্টে কয়েক শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে ঘাট পয়েন্টে পর্যাপ্ত পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়তে হয় যানবাহনে আটক পড়া নারী যাত্রীদের। তবুও প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে ঝুঁকি নিয়েই তা সম্পন্ন করতে হয় বলে জানিয়েছেন নৌপথ পারের অপেক্ষায় থাকা একাধিক নারী যাত্রী।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ১০টা থেকে পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে পাটুরিয়া ঘাট পয়েন্টে নৌপথ পারের অপেক্ষায় আটকে পড়া বেশকয়েকজন নারী যাত্রী জানান, কুয়াশার কারণে মাঝে মধ্যেই ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে এতে কারো হাত নেই। তবে ঘাটে আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য ভ্রাম্যমাণ পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকলেও তা ব্যবহারের অনুপযোগী। কারণ ফেরি ঘাট ও লঞ্চ ঘাটে জেলা প্রশাসনের তৈরি পাকা টয়লেটে যাত্রীদের সিরিয়াল লেগেই থাকে। এছাড়া ঘাট এলাকায় বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা টয়লেট থাকলেও তা হেলে আছে। সেখানে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় বিপাকে পড়তে হয় যাত্রীদের।
খুলনাগামী পরিবহনের যাত্রী আফিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা থেকে রওনা হয়ে মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে সাড়ে ১০টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটে এসে পৌঁছেছি। এরপর থেকে নৌপথ পারের অপেক্ষায় আটকা পড়েছি। ঘাটের হোটেল গুলোতে খাবার খাওয়া যায় না। সে কারণে শুকনো খাবার খেয়েছি। কিন্তু ঘাটের পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা এতটাই খারাপ তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। দুই-একটি যাও আছে তা ব্যবহারের অনুপযোগী। প্রকৃতির ওপর কারো কোনো হাত নেই। আর শীতের মধ্যে কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকাটা স্বাভাবিক। সে কারণে কর্তৃপক্ষের উচিত ঘাট এলাকায় পর্যাপ্ত ভ্রাম্যমাণ টয়লেটের ব্যবস্থা রাখার।
নিলুফা নামে আরেক পরিবহন যাত্রী বলেন, এক দিকে কুয়াশা অন্য দিকে মানুষের চলাফেরা করার কারণে পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাটা আরও নিরাপদ হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ঘাট এলাকার রাস্তার পাশে নুয়ে পড়া দু’টি বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি ভ্রাম্যমাণ টয়লেট থাকলেও সেগুলোতে নেই পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা। কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি এখানে স্বাস্থ্যসম্মত ভালো পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করুন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মাঝ পদ্মায় কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। মাঝ নদীতে ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে আসায় চারটি ফেরি মাঝ নদীতে নোঙর করে আছে।
নারী যাত্রীদের দাবি বিষয়ে ডিজিএম জিল্লুর আরও বলেন, পাটুরিয়া ঘাট পয়েন্টের বেশ কিছু ভ্রাম্যমাণ পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে। মূলত এর দায়িত্বটা আমার বিভাগের না। তবুও যাত্রীরা যেহেতু দাবি করেছে সেজন্য আমরা এখানে আরও কিছু পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থাপন করার চেষ্টা করবো।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাট পয়েন্টে কয়েক শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান ডিজিএম জিল্লুর।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২০
আরআইএস