ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আ.লীগ নেতা হত্যা: প্রতিপক্ষের বাড়ি-প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর-আগুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
আ.লীগ নেতা হত্যা: প্রতিপক্ষের বাড়ি-প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর-আগুন

পাবনা: পাবনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বকুল শেখ হত্যার ঘটনায় প্রতিপক্ষের বসতবাড়িসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।  

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে নিহত বকুল শেখের জানাজার নামাজ ও দাফন শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দক্ষিণ রাঘপুরের নিকারীপাড়ায় প্রতিপক্ষের বসতবাড়িসহ তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।

এসময় বিক্ষুব্ধরা ওই এলাকার বেশ কিছু বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আকস্মিকভাবে এ হামলার সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে বিক্ষুব্ধরা পুলিশের উপর চড়াও হয়। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাদের ছত্র ভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুই ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় তিন পুলিশ আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ঘটনার পরে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে নিহত বকুল শেখের জানাজা ও দাফন শেষে ফেরার পথে শহরের অন্তত বাজার এলাকার দক্ষিণ রাঘপুরে প্রতিপক্ষের বসতবাড়িসহ তাদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অন্তত ২০টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় তারা। এছাড়াও প্রায় ৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা প্রতিটি বসতবাড়ির বৈদ্যুতিক মিটার ও দরজা জানালা ভাঙচুরসহ লুটপাট চালায়। তারা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নাই। এলাকার যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রশাসন তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুক। তবে সাধারণ মানুষের ওপর এই হামলার তীব্র নিন্দা জানান তারা।

পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, পাবনা সদরের দোগাছি ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. বকুল শেখ গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। এ ঘটনায় সকালে দোগাছি, অনন্ত বাজার, দক্ষিণ রাঘপুর, রামচন্দ্রপুর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে। আমরা তাদের নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছিলাম। পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরার জন্য রাতভর অভিযান করেছি। আমরা নজরদারিতে রেখেছি তাদের।

দুপুরে নিহত বকুল শেখের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ইমাম গাজ্জালী নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে। সেখান থেকে সোজা অনন্ত বাজার হয়ে আরিফপুর কবরস্থানে গিয়ে দাফন কাজ শেষ করে। দাফন কাজ শেষে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দক্ষিণ রাঘপুরের নিকারীপাড়ার ভেতরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে। আর কিছু বিক্ষুব্ধরা অনন্ত বাব্জার এলাকায় বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে। আমরা তাদের বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। এসময় আমরা অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের নিয়ে তাদের ছত্র ভঙ্গ করে দেই। এর মধ্যেই তারা বিশৃঙ্খল পরিস্থির সৃষ্টি করে ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে।

বকুল হত্যাকারীদের যেমন ধরা হবে আবার এই ভাঙচুর ও হামলাকারীদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তবে বকুল শেখ হত্যার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। এ সংঘর্ষের সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এই অগ্নিকাণ্ডে কতগুলো দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বসতবাড়ির ক্ষতি হয়েছে সেটি তদন্ত করে পরে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।