ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হাতিয়ার মেঘনায় বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবিতে এখনো নিখোঁজ ৮

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২০
হাতিয়ার মেঘনায় বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবিতে এখনো নিখোঁজ ৮

নোয়াখালী: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ঢালচর এলাকায় মেঘনা নদীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় বর বেঁচে গেলেও নববধূসহ সাতজনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছে আটজন।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে হাতিয়ার নলেরচর থেকে মেঘনা নদী দিয়ে ভোলার মনপুরা যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রলারটি।

বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় নৌ-পুলিশের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন।

ইউএনও আরও জানান, এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নববধূ, নারী ও শিশুসহ সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও এখনো আটজন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজরা হলেন- জাকিয়া বেগম (৫৫), মো. হাছান (৭), নার্গিস বেগম (৪), হালিমা (৪), লামিয়া (৩), নিহা (১), আমির হোসেন ও আলিফ।

স্থানীয়রা জানান, হাতিয়ার নলেরচরে বিয়ে অনুষ্ঠান শেষে নববধূ নিয়ে বরসহ ট্রলার যোগে ভোলার মনপুরা  যাওয়ার পথে ট্রলারটি ঢালচর এসে পৌছঁলে মেঘনা নদীর তীব্র স্রোতের মুখে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।

মৃতরা হলেন- হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের থানার হাট এলাকার ইব্রাহীম সওদাগরের মেয়ে নববধূ তাছলিমা (২০), হরণী ইউনিয়নের মোহম্মদপুর গ্রামের আক্তার হোসেনের মেয়ে আসমা বেগম (১৯), সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের আকবর হোসেনের মেয়ে আফরিনা আক্তার লামিয়া (৯), একই এলাকার আলমগির হোসেনের মেয়ে লিলি আক্তার (৮), নলেরচরের কালাদুর গ্রামের ফয়জ্জুল্লার মেয়ে হোসনে আরা বেগম (৫), চানন্দী ইউনিয়নের পূর্ব আজিম নগর গ্রামের আলা উদ্দিনের স্ত্রী রাহেনা বেগম (৩০) ও একই এলাকার খোরশেদ আলমের স্ত্রী নুরজাহান (৬৫)।

নববধূর বাবা ইব্রাহীম সওদাগর জানান, হাতিয়ার ঢালচরে ট্রলার ডুবির এ ঘটনা ঘটলেও প্রবল স্রোতে পাঁচটি মরদেহ ভেসে যায় লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতিতে। জেলেরা নদীতে ভাসমান মরদেহগুলো ভাসতে দেখে উদ্ধার করে টাংকির ঘাটে নিয়ে আসে। পরে তারা রামগতি থানা পুলিশকে খবর দেয়। অপরদিকে দু’টি মরদেহ পাওয়া যায় চানন্দী ঘাটে। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার পরে অনেকে সাঁতার কেটে ও অন্য ট্রলারের সহযোগিতায় তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শিশুসহ আটজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, তার মেয়ে তাছলিমার সঙ্গে হাতিয়ার ঢালচরের বেলাল মিস্ত্রির ছেলে ফরিদ উদ্দিনের বিয়ে হয়। মঙ্গলবার তাছলিমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরের বাড়িতে নেওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নৌ-পুলিশের ইনচার্জ আকরাম উল্লাহ জানান, মঙ্গলবার দুর্ঘটনার পরপরই হাতিয়ার নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড উদ্ধার অভিযানে নামে। তবে সন্ধ্যা নেমে আসায় উদ্ধার অভিযান থেমে যায়। বুধবার সকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি উদ্ধার করে ঢালচরে রাখা হয়েছে।
 
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন জানান, মৃত সাতজনের পরিবারকে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া আর কারো মরদেহ পাওয়া গেলে তাদের পরিবারকেও আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। পুলিশ রাতেই মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।