ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থে ব্যবহৃত হবেন না: তথ্যমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২১
রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থে ব্যবহৃত হবেন না: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা: কোনো বক্তি বা গোষ্ঠীর রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হতে মাদরাসা শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব পালনে সরকার যে কোনো নৈরাজ্য দমন করার জন্য বদ্ধপরিকর।

রোববার (২৮ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালন না করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে আগমনকে অজুহাত বানিয়ে দেশ, রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পত্তির ওপর আক্রমণ ও আগুন দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পেছনে রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। কোমলমতি শিশু-কিশোরদের রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা, রাজনৈতিক হাঙ্গামার মধ্যে ঠেলে তাদের দিয়ে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেওয়া অত্যন্ত ন্যক্কারজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং দুষ্কৃতিকারী মনোবৃত্তি। ’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কওমি মাদরাসার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অনুরোধ জানাবো, যে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ তাদের রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য আপনাদের ব্যবহারের অপচেষ্টা করছে, ব্যবহার করছে, তাদের বর্জন করুন, তাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবেন না এবং শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করবেন না। ’

তিনি বলেন, কওমি মাদরাসার কল্যাণে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার বহু কাজ করেছেন এবং ইসলামের খেদমতে তিনি যে সমস্ত কাজ করেছেন অতীতে তা কেউ করেনি। দেশে এই কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। প্রায় এক লাখ মসজিদে স্থাপিত মক্তবের আলেমদের প্রতিমাসে সাড়ে চার হাজার টাকা করে ভাতাও তিনি চালু করেছেন। সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পও তিনি বাস্তবায়ন করে চলেছেন এবং শুধু কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি দিয়েই বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষান্ত হননি বরং সেখান থেকে পাস করা অনেককে সরকারি চাকুরিও দিয়েছেন। এর আগে পঁচাত্তরের পরের অন্য সরকারগুলো তাদের পাশে বসিয়ে মুরগির কল্লা-মাছের মাথাই খাইয়েছেন, স্বীকৃতি দেননি।

‘যারা নিজেদের আমিরকে হত্যা করার মতো অপকর্ম করে, তাদের হাতে ধর্ম, রাষ্ট্র কোনটাই নিরাপদ নয়’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির মাওলানা আহমদ শফীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে যে, দলের হাঙ্গামাকারীরা মাওলানা শফীর রাইস টিউব এবং অক্সিজেন টিউব খুলে নিয়েছিল এবং সেই কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ’ 

বিএনপি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করলাম যে, স্বাধীনতা দিবসে এই হামলা এবং হরতালকেও পরোক্ষভাবে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে, আর জামাত সরাসরি সমর্থন দিয়েছে। অর্থাৎ এই নৈরাজ্যের পেছনে বিএনপি-জামাত যে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত, সেটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গতকাল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে খোলসা করে দিয়েছেন। ’

সম্প্রতি ২০ জনের বিবৃতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিবৃতিটি দেখেছি। যে ২০ জন বিবৃতি দিয়েছেন তাদের বুদ্ধিজীবী বলতে আমার লজ্জা হচ্ছে। কারণ তাদের উচিত ছিল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন যারা ধর্মের নামে হাঙ্গামা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়া। কিন্তু তারা সেটি না করে সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেওয়া, ভূমি অফিস, রেলস্টেশন জ্বালিয়ে দেওয়া, থানা ও সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণকারীদের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এরপর তারা আর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বলে নিজেদের দাবি করতে পারেন না, টেলিভিশনের পর্দায় গিয়ে তারা সুশীল বলে দাবি করতে পারেন না, তারা উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে গেছেন। তাই তাদের বুদ্ধিজীবী বলতে লজ্জা হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২১/আপডেট: ২২৪৬ ঘণ্টা
জিসিজি/এমআইএইচ/আরআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।