ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢিলেঢালা ‘কঠোর’ লকডাউন  

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
ঢিলেঢালা ‘কঠোর’ লকডাউন   লকডাউনে নানা অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছেন মানুষ, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দুপুর ১২টা। রাজধানীর দয়াগঞ্জ মোড়।

যানবাহনের বেশ চাপ তখন। সেখানে দাঁড়িয়েই কথা হচ্ছিলো গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা আজিজুর রহমানের সঙ্গে। ইসলামপুরের ব্যবসায়ী তিনি।

বললেন, দেশে লকডাউন চলছে- এটা সরকার বলছে, মানুষ বলছে। কিন্তু কাজেকর্মে কিন্তু তা বোঝা যাচ্ছে না। ‘সীমিত’ বলেন আর ‘বৃহৎ’ বলেন, অফিস বাদে সব কিছুই কিন্তু এখন খোলা। বিশেষ করে রমজান মাস হওয়ায় মানুষ এখন এসব বিধিনিষেধ মানতে নারাজ।

এরপর রাজধানীর টিকাটুলি মোড়, গুলিস্তান, জিপিও মোড়, পল্টন মোড়, কাকরাইল, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, নতুনবাজার পর্যন্ত ঘুরে আজিজুর রহমানের কথারই প্রতিফলনই মেলে।

এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় গণপরিবহন বাদে সব ধরনের যানবাহনই চলছে। কোথাও কোথাও যানবাহনের চাপে কিছুটা গতিও স্লথ হয়েছে। জানা না থাকলে, যে কেউ মনে করে বসতে পারেন, হঠাৎ করেই যেন শহরে গণপরিবহন ধর্মঘট চলছে।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দেশব্যাপী চলমান সর্বাত্মক লকডাউনের নবম দিন। রোজকারের মতো এদিনও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে রয়েছে পুলিশের কঠোর নজরদারি। কিন্তু সে নজরদারি অনেকটাই ‘বজ্র আঁটুনি, ফসকা গেরো’র মতো।

সরকারি নির্দেশনা ছিল, কঠোর বিধিনিষেধের সময়কালে অতি জরুরি না হলে ঘর থেকে রাস্তায় বের হওয়া যাবে না। ১৪ এপ্রিল শুরুর দিন থেকেই মানুষ অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বেরিয়েছেন। রাস্তায় বচসা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গেও।

এতকিছুর পরও নানা অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষরা। শুধু ঘর থেকে বের হয়েই ক্ষান্ত হননি তারা। স্বাস্থ্যবিধিও চরমভাবে লঙ্ঘন হচ্ছে রাস্তাঘাটে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও মাস্ক ছাড়া ঘুরতে দেখা যাচ্ছে লোকজনকে। অনেকেই থুতনিতে, হাতে মাস্ক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দেদারসে।

ঘর থেকে বের হওয়া লোকেদের দাবি, ঘরে বসে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব না। কারণ, ক্ষুধা কোনো লকডাউন বা বিধিনিষেধ মানে না।

পল্টন মোড়ের সানগ্লাস বিক্রেতা বাদল বলেন, সামনে ঈদ, কিন্তু ঘরে খাওয়া নাই। ঘরে বসে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। যে কারণে দোকান খুলেছি। অন্তত দিনের খাবারটা তো জোটে।

কাকরাইল মোড়ে তরমুজ বিক্রেতা আলী বলেন, প্রথমবার অনেকেই খাওন দিছিলো। এবার তো কারো কোনো খোঁজ নাই। আমরা দিন আনি দিন খাই। আমাগো পক্ষে আর ঘরে থাকা সম্ভব না।

মূল সড়কে যখন এ অবস্থা, অলিগলির অবস্থা আরও ভয়াবহ। সারাদিনই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অলি-গলিতে চলছে আড্ডা। রমজান মাস হওয়ায় দিনের বেলায় আড্ডা কম থাকলেও, সন্ধ্যার পর জমে ওঠে আড্ডা।

এদিকে অস্থায়ী পুলিশ চেকপোস্টেও এখন ঢিলেঢালা ভাব। প্রথম দফার কঠোর বিধিনিষেধের মতো পুলিশ চেকপোস্টগুলোও এখন কার্যকর নয়। এছাড়া বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমও আগের চেয়ে অনেক কম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
ডিএন/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।