ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লিচু গাছে আম: রহস্য উদঘাটনে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
লিচু গাছে আম: রহস্য উদঘাটনে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি 

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে লিচু গাছে আম ‘ধরা’র ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক। সেই সঙ্গে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছেন।


 
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের মুটকি বাজার কলোনিপাড়ায় আব্দুর রহমানের মালিকানাধীন আলোচিত ওই গাছটি পরিদর্শন করেন তিনি।

এসময় তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনসহ চার সদস্য বিশিষ্ট্য কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় লিচু গাছে আম ধরা ও ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়দের বক্তব্য নেওয়া হয়।

এসময় তদন্ত কমিটির প্রধান আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন জানান, আমটি ছিঁড়ে ফেলার কারণে গবেষণা করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে ভিডিও এবং অন্যান্য নমুনা সংশ্লিষ্ট গবেষণা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে। গাছটি সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী বছর মুকুল আসা পর্যন্ত অপেক্ষা থাকতে বলা হয়েছে।
 
লিচু গাছটির মালিক আব্দুর রহমান জানান, কোনো পদ্ধতি নয়, স্বাভাবিকভাবেই সেখানে আম ধরেছে। গত শনিবার সকালে তার নাতি হৃদয় ইসলাম এসে তাকে জানায়, লিচু গাছে একটা আম ধরেছে। তিনি গিয়ে গাছে লিচুর থোকার এক পাশে একটি আম দেখে অবাক হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বহু মানুষ এটি দেখতে ভিড় করতে শুরু করেন।


ছোট বলিয়া ইউনিয়নের পাশের গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য একরামুল বলেন, আমার বাড়ি এক কিলোমিটারের মধ্যে। আমটি ছিঁড়ে ফেলার পর গুজব উঠেছে যে এটি আঠা দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে লাগানো হয়েছিল। কিন্তু আমি যতটুকু দেখেছি, এটি বাস্তব যে লিচু গাছে আম ধরেছে। মানুষের তৈরি করা জিনিস আর আল্লাহর তৈরি করা জিনিস এর মধ্যে পার্থক্য পাওয়া যায় কিনা আপনারাই বলুন। যখন এটি ছিঁড়ে ফেলার পর বেশি করে গবেষণা করা হচ্ছে, তখন গবেষণা টিমের সদস্যরা বলছেন যে এ ঘটনা সত্যি হওয়ার সুযোগ ২০ শতাংশ। আর বানানো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৮০ শতাংশ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভিডিও এবং অন্যান্য নমুনা গবেষণা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই রিপোর্ট দেওয়া হবে।  

যে লিচুগাছে ধরা সেই আমটি ছিঁড়ে নিয়ে গেলেন দুই তরুণ। কিন্তু কারা সেই দুই তরুণ, কেউ বলতে পারছেন না। তবে গাছের মালিকের দাবি, স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গেই এসেছিলেন তারা।  

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে আমটি ছিঁড়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন গাছের মালিক আবদুর রহমান।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের (ছোট বালিয়া) মুটকি বাজার কলোনিপাড়ার আবদুর রহমান বলেন, সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সফিকুল ইসলাম সিকিমের ভাতিজা সোহেল রানা আসেন আমটি দেখতে। তিনি বাসায় যাওয়ার পথে একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়।

এ নিয়ে তর্কাতর্কি হলে বিষয়টি তিনি তার চাচা সিকিমকে জানালে সিকিম আমার বাসার এখানে আসেন। তার সঙ্গে তিনজন তরুণ ছিলেন। তার সঙ্গে আসা তরুণরা আমটি ছিঁড়ে ফেলেছেন।  

মুটকি বাজার কলোনিপাড়ার আব্দুর রহমানের বাড়িতে পাঁচ বছর আগে লাগানো লিচু গাছে একটি আম ধরে। যা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। অনেকেই দেখতে আসতো আমটি।

স্থানীয়রা জানান, লিচু গাছে আম ধরার বিষয়টি অবাক হওয়ার মতো। আব্দুর রহমানের লিচু গাছে আম ধরেছে- এমন কথা বললেও প্রথমে কেউ বিশ্বাস করত না। সবাই মনে করত, হয়তো তিনি লিচু গাছে কলম করে আম গাছের চারা রোপণ করেছেন। কিন্তু তা নয়। আব্দুর রহমানের কথা শুনে এলাকার কয়েকজন তার বাড়িতে গিয়ে দেখেন, সত্যিই লিচু গাছে লিচুর সঙ্গে আমও ঝুলছে।  

আব্দুর রহমান বলেন, পাঁচ বছর আগে বাড়িতে লিচু গাছের চারাটি লাগাই। এবার লিচু গাছে ভালো মুকুল এসেছে। গাছ পরিচর্যা করতে গিয়ে চোখে পড়ে, লিচুর সঙ্গেই একই ডালে একটি আমও ধরেছে। পরে আশপাশের লোকদের জানালে এলাকায় বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।