ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বাড়তি খরচ করে দেশ ছেড়েছেন প্রকল্প পরিচালক

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০১ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২১
বাড়তি খরচ করে দেশ ছেড়েছেন প্রকল্প পরিচালক

ঢাকা: নানা খাতে বাড়তি খরচ করে সরকারি চাকরি ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এক প্রকল্প পরিচালক।

সবেশেষে তিনি ‘বাংলাদেশে ঝিনুক ও শামুক সংরক্ষণ, পোনা উৎপাদন এবং চা ‘ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন।

 

ডিপিপিতে ভ্রমণ ভাতা ৬ লাখ, মুদ্রণ ও প্রকাশনা খাতে ২ লাখ এবং মনোহারী খাতে ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু ভ্রমণ খাতে ১ লাখ ৪৮ হাজার, প্রকাশনায় ৭০ হাজার ও মনোহারী খাতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে। অথচ ডিপিপি বর্হির্ভূত এক পয়সাও বাড়তি ব্যয় করার অধিকার কারো নেই। একমাত্র একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে ডিপিপি সংশোধন করেই বাড়তি খরচ করা যায়।  

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ( বিএফআরআই)-এর সাবেক এ কর্মকর্তার নাম ড. মনিরুজ্জামান। তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। বর্তমানে প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড. সেলিনা ইয়াসমিন।

বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, চলমান প্রকল্পের শুরুতে যে প্রকল্প পরিচালক ছিলেন তিনি ড. মনিরুজ্জামান। তিনি ২০১৯ সালে চাকরি ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে গেছেন এবং তার সময়ে এই অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে। তবে প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ভ্রমণ ভাতা, বেতন-ভাতাদি এবং আনুষঙ্গিক খরচসমূহ ডিপিপিতে বরাদ্দকৃত অর্থের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়েছে।

মহাপরিচালক আরো বলেন, প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। বর্তমানে কাজের অগ্রগতিও ভালো।

বিএফআরআই সূত্র জানায়, প্রকল্পের অধীনে আন্তর্জাতিক পরামর্শক খাতে ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ খাতে তিন জন প্রার্থীর জীবন বৃত্তান্ত মূল্যায়নের মাধ্যমে ফিলিপিনের একজন আন্তর্জাতিক পরামর্শক সিলেকশন করা হয়। কিন্তু মহামারি পরিস্থিতির কারণে তিনি বাংলাদেশে আসতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ কারণে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে প্রকল্পের গবেষণা কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ দিতে না পারলেও গবেষণা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদন করা হচ্ছে।  
 
বিএফআরআইয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির মোট ব্যয় ১১ কোটি ৩ লাখ টাকা। জুলাই  ২০১৭ থেকে জুন ২০২১ পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে প্রকল্পটি। প্রকল্পটি মূলত ঝিনুক ও শামুকের পোনা উৎপাদন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন, প্রাকৃতিক মজুদ সংরক্ষণ, ঝিনুক ও শামুকের পপুলেশন ডিনামিক্সের ওপর বেইজ লাইন তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হলো ১২টি থিমের ওপর গবেষণা। ৯টি গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এগুলো হলো, ঝিনুক ও শামুকের পুষ্টি উপাদান নির্ণয়, খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস নির্ণয়, বাংলাদেশে শামুক ও ঝিনুকের পপুলেশন ডিনামিক্সের উপর বেইজ লাইন তৈরি, ওয়েস্টারের প্রজনন ও চাষ কৌশল, আপেল শামুকের প্রজনন ও চাষ ব্যবস্থাপনা, মিঠাপানির ঝিনুকের প্রজনন ও চাষ কৌশল, ঝিনুকের গোনাডের পরিপক্কতা নির্ণয়, বাংলাদেশ ঝিনুক ও শামুকের প্রজাতির শিনাক্তকরণ ও ডিএনএ বারকোডিং, প্রাপ্যতা অনুযায়ী ঝিনুক ও শামুকের ব্যবহার।

গবেষণা কার্যক্রমগুলো বিএফআরআইয়ের বিভিন্ন কেন্দ্র ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ৪টি ক্যাটাগরিতে ১২টি থিমের ওপর ৩১টি ব্যাচে মোট ৭৭৫ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে মৎস্য অধিদপ্তর, বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মী, গণমাধ্যম কর্মী, পরিবেশবিদ ও চাষীরা অন্তর্ভুক্ত।

ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, চাঁদপুর, বগুড়া, যশোর ও বাগেরহাট এলাকায় প্রকল্পের কাজ চলমান।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২১
এমআইএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।