ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বাঁচানো গেল না নেসকোর সেই কর্মীকে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
বাঁচানো গেল না নেসকোর সেই কর্মীকে

রাজশাহী: রাজশাহীতে ১১ কেভি লাইনে বিদ্যুতস্পৃষ্ট সেই নেসকো কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। হাই ভোল্ডেজ এই বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনটি সাটডাউন না করেই কাজ করার জন্য ওপরে তুলে দেওয়া হয়েছিল তাকে।

বলা হয়েছিল, লাইন সাটডাউন করা আছে।  

কিন্তু লাইনে হাত দিতেই বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যান এই কর্মী। ভুল নির্দেশনায় কাজ করতে গিয়ে হারান প্রাণ।  

রাজশাহীতে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) বিদ্যুৎ লাইনে কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারানো ওই কর্মীর নাম রেজাউল ইসলাম রেজা (৪৭)।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মহানগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যুৎকর্মী রেজাউল রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম ঈদগাহের পাশে ৩৩ কেভি লাইনে কাজ করছিলেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেজাউল সেখান থেকে ১১ কেভি লাইনে পড়েন। এরপর নিচে মামুন নামের একজন কর্মীর ওপর পড়ে যান।  

বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন দ্রুত তাকে পিকআপ ভ্যানে করে প্রথমে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থায় আশঙ্কাজনক হওয়ার তাকে রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বিকেলে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। এ সময় জরুরি ভিত্তিতে তাকে ঢাকায় না নিয়ে মাঝপথে থাকা সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

তার মৃত্যুর পর নেসকোর সুপারেনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার শিরিন ইয়াসমিন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঢাকায় নেওয়ার পথে নাটোরের বনপাড়া গিয়েই রেজার নাক দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। সেখানে প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এরপর রওনা দিয়ে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত যাওয়ার পর আবারও নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এই অবস্থায় তাকে জরুরিভাবে সিরাজগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে রেজার মৃত্যু হয় বলেও জানান তিন।

নিহত রেজাউল ইসলাম রেজা রাজশাহী নেসকোর টেকনিক্যাল স্টাফ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার মুসরইল এলাকায়। তবে তিনি মহানগরীর উপশহর এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

তার মৃত্যুর পর নেসকো রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী অনিত রায় বলেন, রেজার এই ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিই ঘটনার সত্যতা যাচাই-বাছাই করে দেখবে। কমিটিই তদন্ত করে দেখবে যে, ওই সময় লাইন বন্ধ করা হয়েছিল, নাকি হঠাৎ করে চালু হয়ে গেছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও সুপারিশের ভিত্তিতে পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এদিকে, তার মৃত্যুর খবরে নেসকো শ্রমিকরা মহানগরীর বিন্দুর মোড়ের কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা এ ঘটনায় নেসকোর নির্বাহী, সহকারী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানান।  

তাদের অভিযোগে ঘটনার দিন হাই ভোল্টেজ লাইন সাটডাউন না দিয়েই কাজে পাঠানো হয়েছিল রেজাকে। এতেই তার মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
এসএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।