ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ভেড়ামারায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২১
ভেড়ামারায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য

কুষ্টিয়া: পাওনা টাকা না পেয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় সিরাজুল ইসলাম (৬০) নামে এক ঠিকাদারী ব্যবসায়ী গালায় রশি পেঁচিয়ে ও বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুর আগে তিনি একটি চিঠি লিখে মৃত্যুর কারণ জানিয়ে গেছেন।

 

বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে ভেড়ামারা উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার সজনী সিনেমা হলের পিছনের সিরাজুল ইসলামের নিজ ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ভেড়ামারা থানা পুলিশ। সিরাজুল ইসলাম ওই এলাকার মৃত নবী শেখের ছেলে।  

মরদেহের পাশে পড়ে থাকা চিঠি সূত্রে জানা যায়, ভেড়ামারা শহরের বামনপাড়া কাস্টমস অফিসের সামনে মৃত ছবেদ মেম্বারের ছেলে আ. সালাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জরে বাবুপুরের মনিরুজ্জমান মনিরে কাছে ৩০ লাখ টাকা পাই। টাকা না দিয়ে মনির ও সালাম এক হয়ে আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করতে থাকি। তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও টাকা না দেওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম।  

তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি মৃত্যুর আগে করে গলাই রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই চিঠিতে।  

নিহতের পরিবারের দাবি, হয়তো এই হাতের লেখা সিরাজুল ইসলামের না। তিনি আত্মহত্যা করেছেন এটা মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দাবি করেন পরিবারের পক্ষ থেকে।

ভেড়ামারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বাংলানিউজকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করতে পারে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল সালাম জানান, আমার কাছ থেকে কোনো টাকা পান না তিনি। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার মনিরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পাথরের ব্যবসা ছিল সিরাজুলের। পরবর্তীকালে তারা ব্যবসায়ে লোকসান করেন। এ নিয়ে গত ১ মাস আসে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকা সিরাজুল ইসলাম ফেরত দিবে মনিরুজ্জামানকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার (০৮ ডিসেম্বর) এ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে তিনি আত্মহত্যা করেন। তার সঙ্গে আমার আর্থিক কোনো লেনদেন নেই।

এ বিষয়ে চাঁপাইনাবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায় মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, ‘মূলত আমি ওনার কাছে ব্যবসায়ী লেনদেনের টাকা পায়। গতরাতে তিনি আমাকে জানায় সকাল ১০টায় টাকা দিয়ে দেবেন। তিনি আব্দুস সালাম একসঙ্গে পাটনার হয়ে ব্যবসা করতেন। তাদের মধ্যে আর্থিক সমস্যা থাকতে পারে।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে আমি ব্যবসা করি। তার হাতের লেখা আমি চিনি। চিঠিতে যে লেখা সেটা অন্য কারো হাতের লেখা। আর আমার মনে হয় তিনি আত্মহত্যা করেননি, কারণ তিনি বিষপান এবং গলাই রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে স্থানীয়রা জানায়। এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য রয়েছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।