সাতক্ষীরা: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাড. সুলতানা কামাল বলেছেন, সন্ত্রাস দিয়ে সন্ত্রাস দমন করা যায় না। এ বিষয়ে আমরা ২০০৪ সাল থেকে কথা বলে আসছি।
তিনি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি কয়েকজন কর্মকর্তার ওপরেই শুধু নয়, বরং তা সরকারের ওপরেও বর্তায়। কারণ এই বিষয়ে সরকার দায় স্বীকার করে বলেনি যে রাষ্ট্রের নির্দেশে এসব ঘটনা ঘটেছে, কী ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল। বর্তমান সরকার শুধুমাত্র উন্নয়নের কথাই বলছে, কিন্তু দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত গভীর সঙ্কটে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন অ্যাড. সুলতানা কামাল।
সাতক্ষীরা জেলা মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাড. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. সাইদুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত প্রমুখ।
সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার কেবলমাত্র উন্নয়নের কথাই বলে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সাম্য, মর্যাদা ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে। সেখানে উন্নয়নের বিষয়টি জোরালো নয়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ঝালকাঠিতে লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন লেগে কতগুলো প্রাণ চলে গেল। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কি একবারও নৌপরিবহন মন্ত্রীকে ডেকে জিজ্ঞেস করেছেন, কেন এই ঘটনা ঘটলো?
তিনি বলেন, দেশে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে দায় সারতে চায়।
বিএনপি বঙ্গবন্ধু হত্যার সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।
বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার উন্নয়নে কাজ করতে না পেরে তারা কেবল গলাবাজিই করছে এবং সড়ক-সেতু নির্মাণের কথা প্রচার করছে।
মানবাধিকার উন্নয়নে তারা কোনো কাজ করছেন না অভিযোগ করে তিনি বলেন, তাহলে আপনারা চেয়ারে বসে আছেন কেন? জনগণ কেনইবা আপনাকে ভোট দেবে?
বাংলাদেশ উন্নয়নের সূচকে অনেক দূর এগিয়েছে জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, তবে মানবাধিকার সূচকে ক্রমেই নিচের দিকে যাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সুভাষ চৌধুরী ওতি অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, দেশটিভির শরীফুল্লাহ্ কায়সার সুমন, উদীচীর শেখ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান দিলু, অ্যাড. শাহনাজ পারভিন মিলি, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, সনাক সভাপতি অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাস, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, মহিলা পরিষদ নেত্রী জোৎস্না দত্ত, মানবাধিকার কর্মী শম্পা গোস্বামী, চ্যানেল ২৪ এর আমিনা বিলকিস ময়না, নারী নেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, গণফোরামের আলী নূর খান বাবুল, আইডিয়ালের ডা. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১
এমএমজেড