ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জ্বর কমলেও থেমে থেমে কান্না করছে সেই শিশুটি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২২
জ্বর কমলেও থেমে থেমে কান্না করছে সেই শিশুটি

রাজশাহী: অতিরিক্ত টিকা দেওয়া সেই দশ মাসের শিশু সুমাইয়ার জ্বর কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখনও থেমে থেমে কান্না করছেই।

সারারাত ঠিকমত ঘুমও আসেনি। তবে, সে স্বাভাবিক দুধ পান করছে। এ ঘটনায় তাই এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই রয়েছেন শিশুটির বাবা-মা। এই ব্যাপারে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে রোববারই (৯ জানুয়ারি)।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত তদন্ত কমিটির কেউ ওই ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এছাড়া সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকেও কেউ কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি।

সোমবার দুপুরে শিশু সুমাইয়া আক্তারের শরীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে তার বাবা সাদ্দাম হোসেন মামুন বলেন, জ্বর কিছুটা কমেছে। তবে রাতে টিকার ব্যথায় ভালোভাবে ঘুমোতে পারেনি। কেবলই থেমে থেমে কেঁদে উঠছে। সকাল থেকেও কান্না করছে। ওর মা সারাক্ষণই মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে থাকছেন। এরপরও কান্না করছেই । আর তার শিশুর এই অবস্থার জন্য সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্যকর্মীরা দায়ী হলেও এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি। তদন্ত কমিটিরও কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ করেন।

এ সময় দায়ীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান সাদ্দাম হোসেন মামুন।

এদিকে ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির ( Expanded Program on Immunization সংক্ষেপে EPI) আওতায় দেশের শিশুদের টিকা দিয়ে আসছে প্রতিটি সিটি করপোরেশন। কিন্তু কখনও এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সাধারণ জন্মের পর দেড় মাস বয়স থেকে ১৫ মাস পর্যন্ত মোট পাঁচবার টিকাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয় শিশুদের। প্রথম তিনটি টিকা দিতে হয় দেড় মাস, আড়াই মাস ও তিন মাস ১৫ দিনে। যক্ষ্মার টিকা ছাড়া এই টিকাগুলো মোটামুটি একই ধরনের। শেষ দুটি হলো এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকা। এটি দিতে হয় ৯ মাস শেষ হলে এবং ১৫ মাসে। একই ধরনের দুটি টিকার মধ্যে ন্যূনতম এক মাস সময়ের ব্যবধান থাকতে হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- এমআর টিকা দেওয়ার বদলে আগের তিন ডোজের অতিরিক্ত কোনো টিকা ভুলক্রমে আবারও দেওয়া হয়েছে ওই শিশুকে। তবে, তার অবস্থা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। জ্বরও কমতে শুরু করেছে।

সাদ্দাম হোসেন মামুন বলেন, ‘আমার মেয়ে সুমাইয়াকে গত বছরের ২৩ জুন তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছিল। গত ১২ ডিসেম্বর চতুর্থ ডোজ দেওয়ার কথা ছিল। আমরা রাজশাহীতে না থাকার কারণে সেসময় টিকা দেওয়া হয়নি। রোববার (৯ জানুয়ারি) শিশুটিকে নিয়ে টিকা দিতে যায় আমার স্ত্রী। সেখানে একটি টিকার পরিবর্তে ৪টি টিকা দেন তারা। অতিরিক্ত টিকা দেওয়ায় আমার বাচ্চার জ্বর আসে। ’

এদিকে তদন্ত কমিটির কাজের অগ্রগতি জানতে চাইল সোমবার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কোনো কথা বলতে চাননি। রোববার ঘটনার পর তিনি জানিয়েছিলেন- এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। শেষ হলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে যে আসলে কী ঘটেছে। আপাত এ ব্যাপারে পুরোটা না জেনে আর কিছু বলা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন>> গল্পে মশগুল স্বাস্থ্যকর্মী ৪ বার টিকা দিলেন শিশুকে! 

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২২
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।