ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে এটিএম জালিয়াতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে এটিএম জালিয়াতি

ঢাকা: তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবুরকান এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্ক্যামিং চক্রের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড। তিনি বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে এটিএম কার্ড ক্লোন করে বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যে গ্রেফতার হন হাকান। প্রায় ২০ মাস সেখানকার জেলে থাকার পর পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় কৌশলে পালিয়ে যান। ভারতীয় এক ব্যক্তির সহায়তায় নেপাল হয়ে নিজ দেশে ফেরেন তিনি।

গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন এটিএম কার্ড ক্লোন করে অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করেন হাকান। মঙ্গলবার ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে এক সহযোগীসহ হাকানকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গ্রেফতার অপরজন হলেন বাংলাদেশের নাগরিক মফিউল ইসলাম।

এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৫টি মোবাইল, ১টি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, গ্রেফতার তুরস্কের নাগরিক হাকান আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্ক্যামিং চক্রের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড। গত ২ জানুয়ারি থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, ইউএসএ, ভারত, তুরস্ক, সৌদিআরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্ক্যামিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে ৮৪ বার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন তিনি।

ইস্টার্ন ব্যাংক অ্যান্টি স্ক্যামিং টেকনোলজি ব্যবহার করায় এলার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয়ে স্ক্যামিং রোধ করতে সক্ষম হয়।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, হাকান ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের পল্টনবাজার পুলিশ স্টেশনের এটিএম স্ক্যামিং মামলায় অন্য এক তুরস্কের নাগরিক ও ২ বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার হন। তারা ভারতের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে কার্ড ক্লোনিং করে প্রায় ১০ লাখ রুপি আত্মসাৎ করেন।

ভারতে প্রায় ২০ মাস জেলে থাকার সময় আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ পান্ত হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে এক ভারতীয় ব্যক্তির সহায়তায় দুই লাখ রুপির বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপালে পৌঁছান। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিজ দেশে ফিরে যান।

ইতোপূর্বে হাকান বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছেন। সবশেষ তিনি গত ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন। তিনি ঢাকার দ্য ক্যাপিটাল হোটেলে অবস্থান করছিলেন।

সিটিটিসির এই কর্মকর্তা বলেন, এই চক্রে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারত, বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত। গ্রেফতারদের পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত একটি মামলায় রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।