ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা, সৎ মা গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
শিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা, সৎ মা গ্রেফতার

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের লাউতারা গ্রামে পাঁচ বছরের শিশু আফসানা খাতুনকে পুকুরের পানিতে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় তার সৎ মা রোকেয়া খাতুনকে (২৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত গভীর রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তালা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রীতিশ রায় তাকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতারের পর বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক রাকিবুল ইসলামের কাছে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রোকেয়া খাতুন।

সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের লাউতারা গ্রামের আব্দুল কাদিরের মেয়ে আফসানা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার হয়। সেসময় আফসানা খাতুনের মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর ও এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।

পরে অনুসন্ধান চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে প্রথম স্ত্রী নার্গিস খাতুনের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ ও বনিবনা না হওয়ায় ২০২০ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে আব্দুল কাদির মোড়লের। এরপর একমাত্র শিশুকন্যাকে মানুষ করার জন্য তাকে পরিবারের লোকজন আবারও বিয়ে করার পরামর্শ দেয়। সেই মোতাবেক ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর কাদির তালার জেয়ালা গ্রামের রোকেয়া খাতুনকে বিয়ে করেন।

কিন্তু রোকেয়া খাতুন প্রথমপক্ষের মেয়ে আফসানাকে দেখতে পারত না এবং প্রায়ই মারপিট করতেন। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী ও শ্বাশুড়ির সঙ্গে রোকেয়া খাতুনের ঝগড়া লেগেই থাকতো। এক পর্যায়ে রোকেয়া প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠে এবং আফসানাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় সে আফসানাকে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল পাশের এক শরিকের পুকুরে গোসল করার নাম করে নিয়ে যায় এবং পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে  বাড়িতে এসে নির্বিঘ্নে সংসারের কাজকর্ম করতে থাকে। এরপর পুকুরে ডুবে শিশু আফসানার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে।

ওই ঘটনার ১০-১২ দিন পর রোকেয়া স্বামীর মনের অবস্থা বুঝে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করে। ঘটনাটি জানতে পেরে কাদির মোড়ল প্রথমে আদালতে একটি সিআর মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছিলেন এসআই প্রীতিশ রায়। অপমৃত্যু মামলা এবং সিআর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিকটিমের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা এবং রাবেয়া খাতুনের স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য শোনেন এবং নিশ্চিত হন।

সর্বশেষ  আব্দুল কাদির মোড়ল মঙ্গলবার (২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি) তালা থানায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়ার নামে  হত্যা মামলা করেন। এরপর মামলার এজাহারনামীয় একমাত্র আসামি রোকেয়াকে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রীতিশ রায় মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে গ্রেফতার করেন এবং বুধবার আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক আসামির স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের ব্যবস্থা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, ১৯ জানুয়ারি, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।