ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইসি নিয়োগ আইন: মতামত না নেওয়ায় হতাশ টিআইবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২২
ইসি নিয়োগ আইন: মতামত না নেওয়ায় হতাশ টিআইবি

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগ আইন-২০২২ প্রণয়নের নাগরিক সমাজ ও অংশীজনের মতামত না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাণ বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে সংস্থাটি মনে করছে মতামত না নেওয়ায় এ আইন সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হতাশা প্রকাশ করে এমন শঙ্কার কথা জানায় টিআইবি।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়- প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ প্রণয়নে সরকারের আকস্মিক পদক্ষেপ ইতিবাচক হলেও প্রস্তাবিত খসড়ায় নাগরিক সমাজ ও অংশীজনদের সুপারিশ আমলে নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি না করায় হতাশা প্রকাশ করেছে টিআইবি। প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগে যে যোগ্যতা ও অযোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে গড়পরতা সাধারণ কিছু মানদণ্ডের বাইরে তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিরূপনে সুনির্দিষ্ট বিধান না থাকা অগ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছে সংস্থাটি। এর ফলে এই আইনের পেছনে যে সাংবিধানিক চেতনা অন্তর্নিহিত এবং একে নিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা, তা পূরণে খসড়াটিকে ব্যর্থ হিসেবে মনে করছে টিআইবি।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর সাংবিধানিক অতিগুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এমন একটি আইন ‘যেনতেন’ ভাবে পাসের একটি প্রক্রিয়া চলছে; যেখানে বিভিন্ন সময় নাগরিক সমাজ এবং অংশীজনদের পক্ষ থেকে দেওয়া সুপারিশমালার অধিকাংশই আমলে নেয়া হয়নি।

নির্ভরযোগ্য অনানুষ্ঠানিক সূত্রে প্রাপ্ত খসড়াটিতে বিশেষ করে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা নির্ধারণে যে তিনটি ধারা প্রস্তাব করা হয়েছে সেখানে তাদের সততা, ন্যায়পরায়নতা, নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা, সৎসাহস ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

নারী সদস্য অন্তর্ভুক্তির কোনো বিধানও রাখা হয়নি। এমনকি অযোগ্যতা নির্ধারণে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেখানে দুই বছরের কম যে কোনো মেয়াদে ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হলেও কমিশনার হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে!

এছাড়া সুনির্দিষ্টভাবে তাদের দলনিরপেক্ষতা তথা রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কিংবা ঋণখেলাপ ও দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতা ইত্যাদি নিরূপন বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই! এমনকি  গুরুতর অসঙ্গতির প্রেক্ষিতে তাদের অপসারণেও সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই,  যা হতাশাজনক।

অনুসন্ধান কমিটিতে যে দু’জন নাগরিক প্রতিনিধির বিধান রাখা হয়েছে তাদের যোগ্যতার মাপকাঠি কী হবে, কমিটির কর্মপদ্ধতি কীরূপ হবে, কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত নামসমূহ প্রকাশ করা হবে কিনা-  এমন প্রশ্ন তুলে নির্বাহী পরিচালক বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান কমিটি প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে দুই ব্যক্তির নাম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করার কথা বলা হলেও, সেই নামসমূহ নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রকাশ করার কোনো বিধান রাখা হয়নি।

অন্যদিকে অনুসন্ধান কমিটিতে প্রস্তাবিত দু’জন নাগরিক প্রতিনিধির যোগ্যতার বিবরণ যেমন নেই, তেমনি কোন নারী সদস্য রাখার বিধানও অন্তর্ভুক্ত নয়। এসব সমাধান না করেই খসড়া চূড়ান্ত হলে, এ আইনের পেছনে যে সাংবিধানিক চেতনা অন্তর্নিহিত এবং একে নিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা, তার বাস্তবায়ন অসম্ভব হবে।

পূর্ণাঙ্গ যাচাই-বাছাইসহ নাগরিক সমাজ তথা সব অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে, খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করার দাবি জানান ইফতেখারুজ্জামান। অন্যথায় এই আইনের সুফল যেমন অধরা থাকবে, তেমনি এর গ্রহণযোগ্যতা ও কার্যকারিতা নিয়েও নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না বলে মত দেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২২
ইইউডি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।