ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গোলের গুড় বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা আয়

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
গোলের গুড় বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা আয় ছবি: বাংলানিউজ

বরগুনা: শীতের মৌসুমে গোল গাছের রস ও গুড় বিক্রি করে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা আয় করেন উপকূলীয় এলাকার জনগোষ্ঠী।

বরগুনার তালতলী উপজেলার করইবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেহেলা ও গেন্ডামারা গ্রামে গেলে দেখা মিলবে সারি সারি গোল গাছের।

গোলের রস ও গুড় বিক্রি করে সংসার চলে এখানকার অধিকাংশ পরিবারের।

তালতলী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে গোল গাছের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সব চেয়ে বেশি গুড় আসে বেহালা ও গেন্ডামারা গ্রাম থেকে। এক মৌসুমে প্রায় ১২ হাজার টন গুড় উৎপাদিত হয়।

গেন্ডামারা এলাকার গাছি মো. রহমতল্লাহ বলেন, প্রায় ৭০০ গাছ থেকে প্রতিদিন রস সংগ্রহ করেন। পরে সেগুলো বাড়িতে এনে আগুনের তাপ দিয়ে গুড় তৈরি করেন। এ কাজে তাকে তার স্ত্রী, ছেলে ও ছেলের বউ সাহায্য করেন। প্রতিবছর রস ও গুড় বিক্রি করে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা আয় করেন।

সরোজমিনে বেহালা ও গেন্ডামারা এলাকা ঘুরে ও গাছির সাথে কথা বলে জানা যায়, বছরের প্রথম দিকে জানুয়ারি মাস থেকে রস সংগ্রহ করে শুরু করে জুলাই পর্যন্ত। এই ৫ মাস গোল গাছের রস ও গুড় বিক্রি করে সারবছর সংসার চলে গাছিদের।

গাছি সুজন সমাদ্দার বলেন, গোলের রসের চাহিদা কম থাকলেও এখন চাহিদা বেড়েছে, দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের কলকাতায় থাকা তাদের কিছু স্বজনদের উপহার হিসেবে পাঠান গোলের গুড়। এরপর সেখানে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই গুড়। এরপর সেই স্বজনরা তাদের কাছে গুড় ক্রয় করে কলকাতায় বিক্রি করেন।

বেহালা গ্রামের গাছি সুকদেব বলেন, গোলের রস প্রতি কলস ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ও গুড় প্রতি কেজি ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। এক কলস রস দিয়ে ৩ কেজি গুড় তৈরি হয়।

গাছিরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা অনভিজ্ঞ চাষি, আমাদের কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ দিলে আমরা আরও পরিচ্ছন্নভাবে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করতে পারি। এক সময়ে এই এলাকার অনেক মানুষ হতদরিদ্র ছিল। আজ আমরা গুড় বিক্রি করে অভাব কাটিয়ে সচ্ছল হয়েছি। এতে কেউ সহায়তা করেনি। কৃষি অফিস থেকে তাদের সহযোগীতা ও প্রশিক্ষণের দাবি জানান।

তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে। গাছিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অভিজ্ঞ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি সুস্বাধু এই গুড় প্যাকেটজাত করে দেশের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের বাইরেও বাণিজ্যিকভাবে পাঠানোর বিষয়ে সুপারিশ করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।