ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হাইমচরে ৬০ বছরেও স্থাপন হয়নি ৪ লঞ্চঘাটের পন্টুন

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২২
হাইমচরে ৬০ বছরেও স্থাপন হয়নি ৪ লঞ্চঘাটের পন্টুন

চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও চরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষই নদী পথে লঞ্চে জেলা সদর, মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকায় যাতায়াত করেন। সকাল ৯টায় এবং রাত ৯টায় দু’টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে উপজেলার সর্বশেষ ঘাট থেকে ছেড়ে যায়।

কিন্তু এসব লঞ্চঘাটে পন্টুন ও বসার স্থান না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বিগত ৬০ বছর ধরে এসব ঘাট ইজারা হলেও যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা নূন্যতম সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ঘাটগুলোতে পন্টুন স্থাপনের দাবি যাত্রী, ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগীদের।

সম্প্রতি এসব লঞ্চঘাট পরিদর্শন এবং যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, হাইমচর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি মেঘনার পশ্চিম ও ৩টি পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হলো লঞ্চ। কর্মক্ষেত্রে এবং ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকায় যেতে লঞ্চ ছাড়া বিকল্প বাহনে ভাড়া অতিরিক্ত। প্রতিদিন বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে ট্রলারে করে চরভৈরবী, হাইমচর, তেলির মোড় ও নয়াহাট লঞ্চঘাটে এসে লঞ্চে ওঠেন যাত্রীরা। কিন্তু লঞ্চঘাটে পন্টুন ও বসার স্থান না থাকায় ভোগান্তি হচ্ছে তাদের। মেঘনা পাড়ের ব্লক বাঁধের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠতে হয়। ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল নিয়ে পড়েন বেকায়দায়। অনেক সময় মূল্যবান মালপত্র নদীতে পড়ে যায়। শিশু ও বৃদ্ধদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে লঞ্চে উঠতে হয়। এ কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন যাত্রীরা।

ঢাকা রিভার্স ট্রান্সফোর্ট পরিচালিত বোগদাদিয়া-৯ লঞ্চের ম্যানেজার কবির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা থেকে হাইমচরের লঞ্চের লাইন চালু হয়েছে কমপক্ষে ৬০ বছর আগে। কিন্তু এ পর্যন্ত এসব ঘাটে কোনো পন্টুন আসে নাই। কেউ ব্যবস্থাও নিচ্ছেন না। যাত্রীদের উঠতে নামতে বহু কষ্ট হয়। আমাদের সামনে অনেক যাত্রী উঠতে গিয়ে পড়েও যায়। কিন্তু আমাদের কিছুই করার থাকে না। আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব ঘাটে পন্টুনের ব্যবস্থা করা হোক।

নয়ারহাট ঘাটের সাবেক ইজারাদার মো. মোহসিন মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ৪টি লঞ্চঘাটের মধ্যে নয়াহাট লঞ্চঘাট ইজরা দিচ্ছেন বিআইডাব্লিউটিএ। বাকি চরভৈরবী, হাইমচর ও তেলিরমোড় ঘাট ইজারা দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। সরকার রাজস্ব পেলেও গত কয়েক যুগ লঞ্চঘাটের নূন্যতম সুবিধাবঞ্চিত এই অঞ্চলের মানুষ।

একই ঘাটের ব্যবসায়ী শরীফ হোসেন গাজী ও আলম সরদার বাংলানিউজকে বলেন, নয়ারহাট ঘাটটি বিআইডাব্লিউটিএর আওতায়। কিন্তু এটিতেও পন্টুন নেই গত ১৩ থেকে ১৪ বছর। লঞ্চে উঠতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। আবার মালপত্র লঞ্চ থেকে নামাতে গিয়ে নদীতে পড়ে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই ভোগান্তি থেকে রক্ষায় দ্রুত পন্টুন ও বসার স্থান স্থাপন করা প্রয়োজন।

চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা একেএম কায়সারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাইমচরের লঞ্চঘাটগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। যাত্রীদের উঠতে নামতে কষ্ট হয়ে তাও উপলব্দি করেছি। খুব শিগগিরই নয়াহাট ঘাটে পন্টুন স্থাপন করা হবে। বাকি ৩টি লঞ্চঘাট যেহেতু উপজেলার আওতাধীন। সেগুলো প্রক্রিয়ার জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে এবং ঘাট ৩টি বিআইডাব্লিউটিএকে হস্তান্তর করা হলে পন্টুনের ব্যবস্থা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।