ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ধর্ষণের কথা ফাঁস করতে চাওয়ায় হত্যা করে ছয় টুকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
ধর্ষণের কথা ফাঁস করতে চাওয়ায় হত্যা করে ছয় টুকরা

ঢাকা: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জোৎস্নার (৩৫) মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতার তিনজন হলেন- জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও অসীত চন্দ্র গোপ (৩৬)।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, জোৎস্না কিছুদিন ধরে রোগে ভুগছিলেন। তার সমস্যার কথা স্থানীয় ফার্মেসি অভি মেডিক্যাল হলের মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে জানালে তিনি তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলেন। এরপর ফার্মেসিতে গেলে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হন ওই নারী। ধর্ষণের কথা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে জিতেশসহ তিনজন জোৎস্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ফল কাটার ছুরি দিয়ে মরদেহ ছয় টুকরা করেন তারা।

তিনি জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনায় নিহত জোৎস্নার ভাই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওষুধ কেনার সুবাদে অভি মেডিক্যাল হলের মালিক জিতেশের সঙ্গে জোৎস্নার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৬ ফেব্রুয়ারি জিতেশ জোৎস্নার মায়ের প্রেশার মাপার জন্য তাদের বাড়িতে যান। তখন জোৎস্না রোগের সমস্যার কথা জিতেশকে জানালে তিনি তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলেন। ওইদিন বিকেলে জোৎস্না জিতেশের দোকানে গেলে তাকে দোকানে কাস্টমার রয়েছে বলে অপেক্ষা করতে বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। এ সময় রাত বাড়ায় জোৎস্নার বাসায় যাওয়ার অস্থিরতা বেড়ে যায়। এ সুযোগে ফার্মেসির মধ্যে জোৎস্নাকে একটি ঘুমের ওষুধ খেতে দেন জিতেশ। এতে জোৎস্না তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। তখন জিতেশ ও তার দুই সহযোগী অনজিৎ ও অসীত তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন। এরপর রাত গভীর হলে ও আশেপাশের দোকান বন্ধ হয়ে গেলে জিতেশ এবং তার দুই সহযোগী এনার্জি ড্রিংকস পান করে জোৎস্নাকে ধর্ষণ করেন। পরে জিতেশ ও তার সহযোগীরা জোৎস্নার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ও তার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর ফল কাটার ছুরি দিয়ে জোৎস্নার দুই হাত, দুই পা, বুক ও পেট ছয় টুকরা করা হয়। এরপর দোকানে থাকা ওষুধের কার্টন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে তারা ফার্মেসি তালা দিয়ে পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, জোৎস্নার মরদেহের ওই খণ্ডিত অংশ পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ভোর হয়ে যাওয়ায় ও লোকজন চলে আসায় তারা সেই কাজটি করতে পারেননি।

এ ঘটনার পর সিআইডির এলআইসি শাখার একাধিক দল আসামিদের গ্রেফতারের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। অভিযানে শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ভাটারা থানার নুরেরচালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিতেশকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জগন্নাথপুর থানার পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনজিৎ ও অসীতকে গ্রেফতার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
পিএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।