ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কাউন্সিলরের হামলায় বাড়ি ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
কাউন্সিলরের হামলায় বাড়ি ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা! হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্বেচ্ছাসেবক রীগ নেতার বাড়ি

ফরিদপুর: ফরিদপুর শহরে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ আওয়াল হোসেন তনুর বিরুদ্ধে প্রতিবেশী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বাড়িতে হামলা ও তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তার পরিবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

অভিযুক্ত সৈয়দ আওয়াল হোসেন পৌরসভার ২৫ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আর ভুক্তভোগী সুমন হোসেন ঝিন্টু ফরিদপুর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি।

সুমন হোসেন ঝিন্টু অভিযোগ করেছেন কাউন্সিলরের লোকেরা তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তার স্ত্রী শিরিন আক্তার।

সুমন হোসেন ঝিন্টুর দাবি, গত পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর সৈয়দ আওয়াল হোসেন তনুর পক্ষে কাজ না করায় এ হামলা করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ২৫ নং ওয়ার্ডের বায়তুল আমান উত্তর সাদীপুর এলাকায় মো. সুমন হোসেন ঝিন্টু এবং তার বড় ভাই মো. নুরুজ্জামান বাবু পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

গত ৬ এপ্রিল বাড়ির গাছের ডাল কাটা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ হয়। কথা-কাটাকাটি এক পর্যায়ে বড় ভাই বাবু আহতও হন। তখন স্থানীয়রা ‘৯৯৯’- এ কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থরে এসে বড় ভাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় ও পারিবারিক বিরোধ মিটিয়ে দেয়।

এরপর রাতে এশার নামাজের পর তারাবির সময় ঝিন্টুর বাড়িতে অতর্কিত ২০-৩০ জন যুবক হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা পুরো বাড়ি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ঘরের বেড়ার ক্ষতিসহ টিভি-ফ্রিজ ও অন্যান্য মালামাল ধ্বংস করেন।

বাদী শিরিন সুলতানা বলেন, আমি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা বাড়িতে হামলা চালায়। আমি কোন মতে আমার ৪ বছরের সন্তান নিয়ে প্রাণে বেঁচে ফিরেছি। চারদিন যাবত বাড়িতে যেতে পারছি না। কমলাপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছি।

তিনি আরও বলেন, কাউন্সিলর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে আমারদের ওপর হামলা নেতৃত্ব দিয়ে আমারদের ওপর হামলা চালায় এবং বলে নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ না করার জন্য এ শান্তি দেওয়া হল। সেই সঙ্গে আমার স্বামীকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। এরপর আমি পুলিশ সুপারের কাছে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছি।

সুমন হোসেন ঝিন্টু বলেন, আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগ শহর শাখার সহ-সভাপতি। আমি কীভাবে বিএনপির পক্ষে কাজ করবো? আমি বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনানীত মেয়র প্রার্থী অমিতাভ বোষের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাই। আর বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করে। তিনি আমাকে তার পক্ষ হয়ে নির্বাচন করতে বললে আমি বাধ সাধি। তখন থেকেই তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত।

তিনি আরও বলেন, আমার কথা হল আমরা ভাইতে ভাইতে ভেজাল করছি, আমরাই আবার মিলে গেছি। আমাদের দুই ভাইয়ের কোনো অভিযোগ নেই। তৃতীয় পক্ষ হয়ে কাউন্সিলর আমার বাড়িতে হামলা চালাবে কেন?

আর বড় ভাই মো নুরুজ্জামান বাবু বলেন, ছোট ভাইয়ের আঘাতে আহত হওয়ায় আমি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। কাউন্সিলর সৈয়দ আওয়াল হোসেন তনুর সঙ্গে পরামর্শ না করে আমি আর কোনো মন্তব্য করতে পারব না।

এ বিষয়ে ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ আওয়াল হোসেন তনু বলেন, ঝিন্টু ও বাবু তারাই ভাইতে ভাইতে মারামারি করছিল। আমি বরং পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের মিটমাট করে দিয়েছি। স্থানীয়দের সহায়তায় তার বড় ভাই বাবুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তাদের উপকার করে আসামি হলাম!

তিনি বলেন, তারা হামলার যে সময়ের কথা বলছে আমি তখন মসজিদে নামাজ আদায় করছিলাম। ঝিন্টু নিজের বাড়িতে হামলা করে এখন আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।

কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, তাদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়:১১৫৫ ঘণ্টা, ১২ এপ্রিল, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।