ঢাকা, সোমবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বারুণীতে ফিরল ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প

বদরুল আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২২
বারুণীতে ফিরল ঐতিহ্যের মৃৎশিল্প

হবিগঞ্জ: করোনাভাইরাস সংক্রমনের কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার হবিগঞ্জের কালিবাড়িতে বসেছে শত বছরের পুরোনো চৈত্রসংক্রান্তির বারুণী। এতে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প আবারও ফিরে এসেছে শৈল্পিক সাজে।

এখানে মাটি দিয়ে তৈরি চমৎকার জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে।

বারুণী শুরু হয় বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে। রাত পর্যন্ত এতে কেনাকাটা চলবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। দুই বছর ধরে বন্ধ থাকায় এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বারুণীতে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, মৃৎশিল্পের দোকানগুলোতে মাটির তৈজসপত্র বেশি হলেও এতে রয়েছে বাঙালি ঐতিহ্যের অন্যান্য পণ্যের সমাহার। দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে আলপনা আঁকা হাঁড়ি-পাতিল, কলস, বাহারি খেলনা, থালা, বাটি, মাটির তৈরি ফলমূল। সকল বয়সের মানুষই এগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

সেখানে আরও পাওয়া যাচ্ছে, একতারা, ডুগডুগি, নকশি করা তালপাতার পাখা, পাখি, নৌকা, ঢোল, মাথাল, বৈশাখী চুরি, বাঁশের কুলা ইত্যাদি।

দুপুরে ব্র্যান্ড অ্যান্ড আইটি বিশেষজ্ঞ মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী রাসকিনের সঙ্গে বারুণীতে এসেছিল তার ছোট্ট ছেলে ইরাম চৌধুরী। ইরাম একটি মাটির তৈরি গরু, হাতি ও পাখিসহ বিভিন্ন জিনিপত্র কিনেছে। সে মেলায় এসে অনেক আনন্দ পেয়েছে।

মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমি নিজে একজন আইটি বিশেষজ্ঞ। বাঙালির প্রাণের সংস্কৃতি চর্চার সময় খুব কম হয়। এবার একটু সুযোগ পাওয়ায় সংস্কৃতির সঙ্গে ছেলেকে পরিচয় করাতে নিয়ে এসেছি। সে খুব আনন্দিত। প্রতিবারই আমি আমার ছেলেকে এই মেলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করব।

 বানিয়াচং উপজেলার গুণই গ্রাম থেকে জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসা সুধীর দাস জানান, এখানে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দামের মাটির জিনিসপত্র পাওয়া যায়। রাত পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার টাকার বিক্রি করতে পারবেন এবং এতে ভালো মুনাফা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এছাড়াও মেলাতে রয়েছে খই, মুড়ি, বাতাসা, নকুলদানা, খুরমাসহ পুরোনো ঐতিহ্যবাহী খাবার।  

দুপুরে মেলা থেকে মাটির জিনিসপত্র কিনে আনন্দের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে শিশু মুনা, অঞ্জলী, রাত্রী, অনন্যা, রাজু ও অর্জুসহ অনেক শিশুকে।

 হবিগঞ্জ কালিবাড়ি কমিটির সভাপতি বিভৎসু দাশ চক্রবর্তী বিভু বাংলানিউজকে বলেন, শত বছর ধরে চৈত্রসংক্রান্তির এই বারুণী বসছে। দলমত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই এখানে আসেন। এই আধুনিক যুগে এসে কালিবাড়ির এই বারুণিটি বাঙালি ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।