যশোর: যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে একটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও এক যুবককে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাতে যশোর শহরের ষষ্টিতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের ষট্টিতলা এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত শোভনের সঙ্গে সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকার আবুল হোসেনের মেয়ে তহমিনা খাতুনের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে ৪ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হতো। এর জের ধরে গত ১৮ এপ্রিল শোভন তহমিনাকে তালাক দেন। এরপর বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাতে তহমিনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ ১০ থেকে ১৫ জনকে নিয়ে ষষ্টিতলায় শোভনের বাড়িতে যায়। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম মিলন শোভনকে পুনরায় বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।
কিন্তু শোভন রাজী না হওয়ায় শহিদুল ইসলাম মিলনসহ তার সঙ্গে আসা কিছু বহিরাগত যুবক তাকে বেধড়ক মারপিট বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। এমন পরিস্থিতিতে শোভন নিজেকে বাঁচাতে ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন দিলে যশোর কোতয়ালী মডেল থানা থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে পুলিশ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, শোভন ও তহমিনাকে থানায় নিয়ে আসে। সেখানেও পুলিশ দু’পক্ষের সঙ্গে বিষয়টা মীমাংসা করার টেষ্টা করে।
থানায় শোভন সাংবাদিকদের জানান, তহমিনা আমার অবাধ্য হয়ে চলায় তাকে আমি তালাক দিয়েছি। এর চিঠিও তাকে পাঠিয়েছি। পরবর্তীতে আবার বিয়ে করার জন্য সে দুঃসম্পর্কের নানা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ বিভিন্ন লোকজনকে দিয়ে আমাকে চাপ দিতে থাকে। আমি তাদের কথা না শোনায় বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ আমার বাড়িতে এসে ভাঙচুর ও আমাকে বেধড়ক মারপিট করে। পরে নিজেকে বাঁচার জন্য পুলিশকে ফোন দিলে আমাকে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় আনে। থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে এজাহারে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির নাম থাকায় পুলিশ আমার মামলা নেয়নি। বরং তহমিনা যে আমার নামে নারী নির্যাতন মামলা করেছে সেটি তারা নিয়েছে।
এ বিষয়ে তহমিনা জানান, আমাকে বিভিন্ন সময় মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শোভন নির্যাতন করতো। তারপরও আমাদের চার বছরের সন্তানের দিকে তাকিয়ে তার সংসার করে গেছি। এখনো তার সংসার করতে চাই। কিন্তু সে বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে তালাক দিয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, মেয়েটাকে অন্যায়ভাবে বাড়ি থেকে বের করে দরজা দিয়ে দেয়। তারপর তার পরিবার আমার কাছে নালিশ দেয়। মেয়েটা আমার আত্মীয় হওয়ায় সেই রাতে শোভনের বাসায় যাই। সেখানে তাকে অনুরোধ করি, আজকের রাতের মতো মেয়েটাকে আশ্রয় দাও। কিন্তু সে উল্টো আমাদের সঙ্গে খারাপ আচারণ করে। বাড়ির দরজা না খোলায় কিছুটা বল প্রয়োগ করে দরজা খোলা হয়। কোনো ভাঙচুর বা মারধর করা হয়নি।
যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, রাতে ‘৯৯৯’ থেকে ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে দু’পক্ষকে থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় মেয়েটি মামলা করলে শোভনকে আটক করে পুলিশ। আর ছেলে পক্ষের অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২২
ইউজি/এমএমজেড