ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মঠবা‌ড়িয়া থানার ওসি-এসআই’র বিরুদ্ধে ‘টাকা খাওয়ার’ অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২২
মঠবা‌ড়িয়া থানার ওসি-এসআই’র বিরুদ্ধে ‘টাকা খাওয়ার’ অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার

বরিশাল: পি‌রোজপু‌রের মঠবা‌ড়িয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলেছে উপজেলায় হামলার শিকার এক পরিবার। এ ছাড়া থানার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘টাকা খাওয়ার’ অভিযোগও করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলা হয়। লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন তুষখালী গ্রামের ভুক্তভোগী মো. মনির হোসেনের স্ত্রী মোসা. হালিমা বেগম। এ সময় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বাদল ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনি টাকা খাওয়ার অভিযোগ করেন।

হালিমা বেগম বলেন, স্থানীয় আব্দুর রহমান হাওলাদার, তার ছেলে শফিকুল ইসলাম, সৈয়দ হাওলাদার ও তার ছেলে মোস্তফা হাওলাদার এবং মৃত আ. ছত্তার হাওলাদারের সঙ্গে তাদের পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জের ধরে প্রায়ই হালিমা বেগম ও তার স্বামী মনির হোসেনকে মারধর করা হতো।

এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা (সিআর-১৫৭/২২) দায়ের করেন তারা। এতে মামলার আসামিরা (উল্লিখিত) ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৫ এপ্রিল হালিমা বেগমের ঘরে ঢুকে লোহার রড দিয়ে মনির হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এক পর্যায়ে ঘাড়ে কোপ দিলে তার কান কেটে যায়। আহত অবস্থায় তিনি মঠবাড়িয়া থানায় গেলে ওসি নুরুল ইসলাম বাদল ছবি তুলে রাখেন। এরপর উপজেলা হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মনিরকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

শেবাচিমে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ১৭ এপ্রিল মঠবাড়িয়া থানায় মামলা করতে যান মনির ও তার পরিবার। লিখিত বক্তব্যে হালিমা বলেন, এ সময় ওসি বাদল তাদের বলেন, মামলা করতে কত খরচ লাগে দিতে পারবি? পরে তিনি চাল বিক্রি করে ওসিকে ৫ হাজার টাকা দেন। এরপর এএসআই নজরুল ইসলামকেও সাড়ে ৫ হাজার টাকা দেন হালিমা বেগম।

ভুক্তভোগী হালিমা বলেন, টাকা দেওয়ার পরেও তারা থানায় মামলা নেয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ইব্রাহীমের কাছে গেলে তিনি মামলা নিতে ওসিকে নির্দেশ দেন।

হালিমার অভিযোগ, মামলার আসামি শফিকুল ইসলাম তুষখালী চেয়ারম্যান শাহজাহানের ছেলে শামীমের বন্ধু। তাই শামীর তাদের পক্ষে কাজ করছেন। ওসি এবং এসআই তার কাছ থেকে টাকা খেয়ে তাদের পক্ষে কাজ করেন। তাই তাদের (হালিমার) মামলাও নেননি।

মামলা দায়েরের পর চেয়ারম্যানের ছেলে শামীম তার দলবল নিয়ে অবৈধভাবে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। এছাড়া অনবরত খুনের হুমকি দিচ্ছেন তারা। হুমকি দেওয়া হচ্ছে একের পর এক মামলা করারও। এ অবস্থায় ওসি, এসআই, ও চেয়ারম্যানের ছেলের হাত থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি এবং বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন হালিমা বেগম ও তার পরিবার।

এ ব্যাপারে শফিকুল বা শামীমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অ‌ভি‌যো‌গের পরিপ্রেক্ষিতে মঠবা‌ড়িয়া থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ওই নারীকে চি‌নি না। আর তাছাড়া আমি ১৬ থেকে ১৮ এপ্রিল ছু‌টি‌তে ছিলাম। আমি থানায় ফোন দি‌য়ে মামলাও নি‌তে ব‌লে‌ছি। ১৭ এপ্রিল মামলা রুজু হয়। আমার বিরু‌দ্ধে ষড়যন্ত্র করা হ‌চ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, ১৯ মে, ২০২২
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।