ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৩০ মে ২০২৪, ২১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

অসুস্থ্ শিশু কোলে অজানার উদ্দেশে কিশোরী মা, অতপর…

সোহাগ হায়দার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৮ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২২
অসুস্থ্ শিশু কোলে অজানার উদ্দেশে কিশোরী মা, অতপর…

পঞ্চগড়: যৌতুকের জন্য স্বামী-শ্বশুরবাড়ির মানুষের নির্যাতনের শিকার হয়ে দুই মাসের অসুস্থ কন্যা শিশুকে নিয়ে অজানার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তাসমিনা আক্তার (১৭) নামে এক কিশোরী মা। পঞ্চগড় শহরের এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করতে দেখে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা।

পরে পুলিশ হেফাজতে তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) সন্ধায় পঞ্চগড় শহরের সি.এন্ড.বি মোড় এলাকা থেকে এই কিশোরী মাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

তাসমিনা আক্তার নামে ওই কিশোরী পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের পেলকুজোত গ্রামের হতদরিদ্র তরিকুল ইসলামের মেয়ে। তিনি একই ইউনিয়নের বন্দিভিটা গ্রামের খয়রুল ইসলামের ছেলে আরিফ হোসেনের স্ত্রী।

জানা যায়, যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুর- শ্বাশুড়ির লোকেদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই কিশোরী বাবার বাড়ি থেকে অজানার উদ্দেশে বের হন। একসময় পঞ্চগড় শহরের সি.এন্ড.বি  মোড় এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অসুস্থ্ শিশুসহ কিশোরী মাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।

কিশোরী তাসমিনা আক্তার বাংলানিউজকে অভিযোগ করে বলেন, ২০২০ সালে আরিফের সঙ্গে পারিবারিক ভাবে ঘটা করে বিয়ে হয় তার। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বাবা এক লাখ টাকা দেন। বিয়ের কদিনের মাথায় সন্তান সম্ভাবা হই। কয়েক মাস পরেই যৌতুকের দাবি তুলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সে দাবি পূরণ করতে না পারায় স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা আমার উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। তাদের নির্যাতনে প্রথম সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর আবার সন্তান সম্ভাবা হই। একই সঙ্গে আমার উপর বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা। বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে জন্ম দেই এই কন্যাশিশুর। স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকেরা খবর নেয় না। অতিরিক্ত দু'জনের ভার দারিদ্রতার কারণে বাবা নিতে পারছিলেন না। তাই বাধ্য হয়ে অজানার পথে বের হই।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ওই অসুস্থ শিশুসহ তাসমিনাকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছে। যৌতুক বা কোন বিষয়ে ওই তরুণে আমাদের এখনো অভিযোগ করে নি। আমরা তার বাবার বাড়ি ও স্বামীর বাড়ির লোকেদের থানায় আসার খবর দিয়েছি। তারা আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিশোরী থানায় অভিযোগ করলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২১২ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২২
এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।