সাভার (ঢাকা): সাভারে দূরপাল্লার ‘সিংড়া এলিগ্যান্স’ নামে যাত্রীবাহী একটি বাসে রাতভর ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাতদের ছুরিকাঘাতে ও পিটুনিতে বাসচালকসহ অন্তত ১৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৯ জুন) ভোর ৪টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের সিএন্ডবি মোড় থেকে দুইজনকে আটক করা হয়।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৮ জুন) রাতভর ডাকাতরা বাস চালিয়ে আশুলিয়া থেকে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর ঘুরে চন্দ্রা, জিরানী, বাইপাইল, নবীনগরে হয়ে পুনরায় সাভার থানাধীন সিএন্ডবি মোড়ে ডাকাতি চালায় ও যাত্রীদের মারধর করে।
আটকরা হলেন- মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার লাউতারা গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ফিরোজ ইসলাম বিজয় (৩০) ও আমতলী গ্রামরে হাবিবুর শেখের ছেলে হৃদয় (২৫) ও মাহমুদ খলিল নাটোর জেলার সিংড়া থানার বাহাদুরপর গ্রামরে আব্দুল লতিফের ছেলে মাহমুদ খলিল (৪০)। তাদের মধ্যে মাহমুদ খলিলকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- নাটোর জেলার সিংড়া থানার শেরকোলা গ্রামের মৃত মো. খানের ছেলে বাসচালক আব্দুল মান্নান, মো. কুতুব আলীর ছেলে হেলপার মো. শামীম, শের উদ্দিনের ছেলে সুপাইভাইজার মো. মকবুল হোসেন। এছাড়া বাসের আরও কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, গতকাল রাত ১১টার দিকে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে ‘সিংড়া এলিগ্যান্স’ নামে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী একটি বাস (যার নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৩৮৪১) যাত্রী নিয়ে নাটোরের উদ্দেশে রওনা দেয়। পরে বাসটি সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় পৌঁছালে নাটোরে যাওয়ার জন্য সেখান থেকে সাত যাত্রী বাসে ওঠেন। এসময় বাসে আরও চল্লিশজন যাত্রী ছিল। পরে বাসটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় পৌঁছালে বাইপাইল থেকে ওঠা মুখোশধারী যাত্রীবেশী পাঁচ ডাকাত বাসের ড্রাইভার হেলপারসহ যাত্রীদের অতর্কিত ভাবে ছুরিকাঘাতে ও পিটিয়ে আহত করে সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ মালামাল লুটপাট করে। এসময় এক ডাকাত গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সে গাড়ি চালিয়ে টাঙ্গাইল দিয়ে ঘুরিয়ে আবারও সাভারের সিএন্ডবি এলাকায় এসে গাড়ি রাখেন। এসময় কিছু যাত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার দিলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে টহলরত সাভার মডেল থানার এসআই মজিবুর রহমান ডাকাতির বিষয়টি বুঝতে পেরে সেখানে গেলে তিন ডাকাত পালিয়ে গেলেও ফিরোজ আর হৃদয় নামের দুই ডাকাততে আটক করে।
পুলিশ আরও জানায়, পরবর্তীতে আহত বাসচালক বাস চালিয়ে আশুলিয়া বাইপাইল মোড়ে পৌঁছে আশুলিয়া থানা পুলিশকে জানালে আশুলিয়া থানা পুলিশ ডাকাত সন্দেহে ওই বাসের টিকেট চেকার মাহমুদ খলিলকে আটক করে সাভার মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
মকবুল হোসেন নামে বাসের সুপারভাইজার বাংলানিউজকে বলেন, গাড়িটি গাবতলী থেকে ছাড়ে। রাতে বাইপাইল থেকে কয়েকজন যাত্রী বাসে ওঠে। গাড়িটি টাঙ্গাইল পৌঁছার আগে কয়েকজন ড্রাইভারকেসহ আমাদের চাকু দিয়ে আঘাত করে। ড্রাইভারকে মেরে তার সিট থেকে সরিয়ে দেয়। পরে ডাকাতদের একজন গাড়ি চালায়। এরপর শুরু হয় যাত্রীদের কাছ থেকে সব মালামাল ও টাকা-পয়সা নেওয়া। ভোরে এসে দেখি আমরা সাভারে।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দুইজনকে আটক করেছি। আর বাসের টিকিট চেকারকে আশুলিয়া থেকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছে। আহত বাসচালক, হেলপার, সুপারভাইজার ও যাত্রীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। যাত্রীবাহী বাসটি আশুলিয়া থানা পুলিশ হেফাজতে আছে। অন্য ডাকাতদের আটকের চেষ্টা চলছে ও সাভার মডেল থানায় একটি ডাকাতির মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২২
এসএফ/আরএ